গারো বরেণ্য গবেষক এবং প্রবন্ধকার সুভাষ জেংচাম– এর জন্ম ১৯৪৩ সালের ২০শে জুন ময়মনসিংহ জেলার ফুলবাড়িয়া থানার দরগাচালা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি দরগাচালা গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে পঞ্চম শ্রেণি পাশ করে ১৯৫৩ সালে বিরিশিরি মিশন স্কুলে লেখাপড়া করেন।
পরবর্তীতে টাঙ্গাইল জেলার ধলাপাড়া উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ম্যাটিক পাশ করেন। ষাট দশকের গোড়ায় ঢাকার স্বনামধন্য নটরডেম কলেজে ভর্তি হন এবং নটরডেম কলেজ থেকে আই.এ ও স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন।
সুভাষ জেংচাম এর কর্মজীবন
তিনি ময়মনসিংহে মিশনারী দ্বারা পরিচালিত সেন্ট মাইকেল স্বাস্থ্য কেন্দ্রে চাকরি জীবন শুরু করেন। পরবর্তীতে ফা. ইউজিন হোমরিক, সি.এস.সি’র আহ্বানে জলছত্র মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেন। সুভাষ জেংচাম বাংলাদেশে গারো জাতির মধ্যে সর্বপ্রথম ইপিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে সরকারি চাকরিতে কর্মকর্তা হন।
১৯৬৮ খ্রীষ্টাব্দে প্রাদেশিক সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে আইন ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীন উপ-নিবন্ধক হিসেবে ১৯৬৯ খ্রীষ্টাব্দে সরকারি চাকরিতে যোগদান করেন। ফরিদপুর জেলার মুকসুদপুর থানায় দায়িত্ব পালনকালে ১৯৭১ খ্রীষ্টাব্দে স্বাধীনতা যুদ্ধে তিনি সরাসরি সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণের জন্য দেশত্যাগ করেন।
তিনি সরকারি চাকরি জীবনে দীর্ঘ ত্রিশ বছর বিভিন্ন উপজেলা ও জেলায় সৎ ও নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করেন। সরকারি চাকরি জীবনে সর্বশেষ তিনি শেরপুর জেলা রেজিস্টার হিসেবে কর্মজীবন থেকে ২০০১ খ্রীষ্টাব্দে অবসর গ্রহণ করেন।
স্বাধীনতাত্তোর বাংলাদেশে হাতে গোনা যে ক’জন গারো লেখীয়ে বাংলা সাহিত্যাঙ্গনে পা রেখেছিলেন আজকের প্রাবন্ধিক এবং গবেষক তিনি তাঁদের মধ্যে প্রথম এবং অন্যতম প্রধান লেখক। সুভাষ জেংচাম লেখালেখি করছেন দীর্ঘদিন এবং এখনো নিরবে নিভৃতিতে লিখে চলেছেন অনবরত।
প্রকাশিত গ্রন্থসমূহ: তাঁর প্রথম গবেষণা গ্রন্থ ”বাংলাদেশের গারো সম্প্রদায়’, ‘গারোদের সমাজ ও সংস্কৃতি’, ‘গারো আইন’, ‘গারোদের সাংস্কৃতিক জীবন ধারা’, ‘বাংলাদেশের গারো অঞ্চলে ক্যাথলিক মিশনারিগণ’, ‘পান্থজনের পাঁচালী’, ‘গারো অঞ্চলে মিশনারিদের আগমন’ ইত্যাদি গ্রন্থসমূহ।