আদিতে গারোরা সনাতন কায়দায় এবং প্রাকৃতিকভাবে ধর্মীয় বিশ্বাসগুলোকে চর্চা করতো। সেই ধর্মীয় মূল্যবোধ বা আদি বিশ্বাসের নাম সাংসারেক ধর্ম। গারোদের সাংসারেক ধর্মের ভূ-উৎপত্তি ঠিক কবে নাগাদ সঠিকভাবে বলা না গেলেও ধর্মীয় ঐতিহ্যটি অনেক প্রাচীন সে সম্পর্কে কারোর বির্তক নেই।
ঐতিহাসিকদের মতে, সাংসারেক ধর্ম বিশ্বের সংখ্যাগুরু খ্রীষ্টিয়ান এবং ইসলাম ধর্মের চেয়েও প্রাচীন। অনেকের মতে সনাতন বা হিন্দু ধর্মের সমসাময়িক; তাই মেজর এ প্লেফেয়ার তাঁর The Garos গ্রন্থে হিন্দু ধর্মের মত এই সাংসারেক ধর্মকেও Animism-এ বিশ্বাসী বলে উল্লেখ করন। এই এনিমিজম বা Animism-এর সংজ্ঞা কি!
Wikipedia-র সংজ্ঞা মতে,
Animism (from Latin anima, "breath, spirit, life") is the worldview that non-human entities; such as animals, plants, and inanimate objects possess a spiritual essence.
আবার বলা আছে,
Animism encompasses the belief that there is no separation between the spiritual and physical (or material) world, and souls or spirits exist, not only in humans, but also in some other animals, plants, rocks, and geographic features such as mountains or rivers, or other entities of the natural environment, including thunder, wind, and shadows. Animism thus rejects Cartesian dualism. Animism may further attribute souls to abstract concepts such as words, true names, or metaphors in mythology. Some members of the non-tribal world also consider themselves animists (such as author Daniel Quinn, sculptor Lawson Oyekan, and many Neopagans).
অর্থাৎ ব্যাপক অর্থে Animism শব্দের অর্থ বহু দেবতা এবং উপদেবতায় বিশ্বাসকে বুঝায়। তবে, অন্যান্য ধর্মের মত এ সাংসারেক ধর্মের কোন প্রমানপত্র বা ধর্মগ্রন্থ নেই। আদিমকাল থেকে এই ধর্ম মুখে মুখে এবং ধর্মাচার পালনের মধ্য দিয়ে আজ পর্যন্ত যৎসামান্য টিকে রয়েছে।
সাংসারেক ধর্ম এবং দেবদেবী
গারোদের সৃষ্টিতত্ত্ব প্রায় অন্যান্য প্রধান প্রধান ধর্মবিশ্বাসের অনুরূপ। বিশেষ করে পবিত্র বাইবেলে বর্ণিত সৃষ্টিতত্ত্বের সঙ্গে ব্যাপক সাদৃশ্য বিদ্যমান। তাদের বিশ্বাস আদিতে এই বিশ্বব্রহ্মাণ্ড জলময় ও ঘোর অন্ধকারাচ্ছন্ন ছিল। পরবর্তীকালে প্রধান দেবতা তাতারারাবুগা তাঁর সহচর নস্তু-নপান্তু ও অন্যান্য দেব-দেবীর সহায়তায় পৃথিবী, আকাশমণ্ডল, গ্রহ-নক্ষত্র, সাগররাজি, পর্বতমালা, নানা জীব-জন্তু, গাছপালা প্রভৃতি সৃষ্টি করেন।
তাতারা-রাবুগা ছাড়াও গারোদের উপাস্য আরও অনেক দেব-দেবী রয়েছে। এইসব দেব-দেবীর কারো কারো দায়িত্ব মানুষকে বিষয় সম্পদে সৌভাগ্যশালী করা আবার কারো কারো দয়িত্ব মানুষকে নানাবিধ রোগ-ব্যাধি প্রদানের মাধ্যমে শাস্তি প্রদান করা।
মূলত, শান্তি, নিরাপত্তা, নীরোগ স্বাচ্ছন্দ্যময় জীবনের আকাঙ্ক্ষায়ই মানুষ দেবতাকে আবিষ্কার করেছে। তাই মানুষ হয়তো জীবনের একেকটা দায়িত্ব একেক দেবতাকে অর্পণ করে নিশ্চিত হতে চেয়েছে।
গারো জনগোষ্ঠীর মধ্যেও এই প্রবণতা লক্ষণীয়। ফলে উল্লিখিত দেবতা ছাড়া জীবনের অন্যান্য বিষয় ও দিকের নিয়ন্তারূপে আরো অসংখ্য দেবদেবীকে শনাক্ত করেছে এবং পূজা করে থাকে।
আপাত দৃষ্টিতে এসব বিশ্বাস প্রায়ই যুক্তিহীন, আবার কোথাও বিজ্ঞানভিত্তিক যুক্তিযুক্ত। গারোরা সর্বশক্তিমান সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্বে বরাবর বিশ্বাস করে এসেছে। তিনি যে এই পৃথিবীর সবকিছুর স্রষ্টা এ বিশ্বাস গারোদের মধ্যে ছিল। গারোরা একই সঙ্গে মানবদেহে আত্মার অস্তিত্বে বিশ্বাসী এবং সেই আত্মা যে অবিনশ্বর এটাও তারা বিশ্বাস করে।
তারাও হিন্দুদের মতো জন্মান্তর বাদে বিশ্বাসী। গারোদের প্রথাগত বিশ্বাস ও সংস্কার সর্বস্ব একটি অনানুষ্ঠানিক কৃষিভিত্তিক ধর্মোৎসব রয়েছে। জমির উর্বরতা বৃদ্ধি, ফসল সংরক্ষণ, রোগশোক, মহামারী, ভূত-প্রেত-রাক্ষস ইত্যাদি অদৃশ্য অপশক্তির অমঙ্গল থেকে বাঁচার জন্য তারা বারো মাসে তেরো কিংবা ততোধিক ব্রত ও পর্ব-পার্বণ পালন করে।
নৃ-গোষ্ঠীর প্রকৃত পরিচয়টি বিধৃত হয় তার Ritual-এর অবয়বে। আদি গারো এবং বর্তমান সাংসারেকদের বিশ্বাস অনুসারে একেক দেবতার মর্জি, বাসনা একেক রূপ। তাঁদের খুশি করার রীতিও ভিন্ন ভিন্ন। ভিন্ন ভিন্ন তাঁদের উপাচার, নৈবেদ্য, মন্ত্র এবং পূজার লগ্ন। কৃত্যের বাঁধা ছকে আবদ্ধ জীবন তাই কৃত্য সর্বস্ব।
সাংসারেক ধর্মের দেব-দেবীকে বলা হয় মিদ্দি বা মিতদে বা মিদ্দে।
ধরাটি গ্রামের খামাল দীনেশ নকরেক, চুনিয়া গ্রামের খামাল জনিক নকরেক, সাইনামারী গ্রামের খামাল নরেশ মৃ প্রমুখগণ তাদের বর্ণনায় জানিয়েছেন সাংসারেক ধর্মে প্রায় ৭০০০ দেবতা, ৭০০ উপদেবতা (মিদ্দি হাজালস্নি, কাচ্চি রিচ্চাসনি) রয়েছে।
এই ধর্মের লিখিত ধর্মগ্রন্থ নেই বলে এই সব দেবতাদের নাম জানা বা সংগ্রহ করার কাজটি ছিলো আমাদের কাছে অত্যন্ত কঠিন। কেননা, খামালরাও শুধুমাত্র উল্লেখযোগ্য কিছু সংখ্যক দেবতাদের উদ্দেশে পূজা দিয়ে থাকেন এবং তাঁদের নামই মনে রাখতে পারেন।
আমরা উক্ত খামালদের সাথে আলাপের পর বাংলাদেশের গারো বিষয়ক প্রবন্ধগ্রন্থ বা গবেষণা গ্রন্থ ঘেঁটেছি, কিন্তু সেগুলোতেও কোথাও একসাথে অনুর্ধ ২০/৩০টির বেশি নাম পাওয়া যায় নি। অগত্যা আমাদেরকে প্রায় সারা বাংলাদেশে অবস্থানরত খামালদের সাথে বারবার সাক্ষাৎ করে নাম সংগ্রহ করতে হয়েছে এবং অনেক বিদেশি লেখক, বিশেষভাবে ভারতের গারো লেখকদের গ্রন্থের দ্বারস্থ হতে হয়েছে।
গারো সাংমসারেকদের বিশ্বাস অনুসারে, সাংসারেকদের সকল মিদ্দি বা দেবতাদের শক্তিধর। বিভিন্ন দেবতাদের বিভিন্ন ক্ষমতা রয়েছে। এই দেবতারা সবসময় মানুষের কল্যাণ করে থাকেন। তবে, মানুষ তাদেরকে (দেবতাদেরকে) ভুলে গেলে বা অমান্য করলে দেবদেবীরা মানুষকে শাস্তি দিয়ে থাকেন; আর তখনই দেব-দেবীর উদ্দেশে আমুয়া (পূজা) দিতে (বাধ্য) হয়। এ ছাড়াও মানুষের অকল্যাণকারক বা অপদেবতাদের বিভিন্ন নাম রয়েছে।
নিম্নে প্রাপ্ত সাংসারেক দেবদেবীদের নাম দেওয়া হলো-
১)মিদ্দি আপফা তাতারা_রাবুগা (Tatara Rabuga):
আপফা তাতারা-রাবুগা জগৎ স্রষ্টা; তাঁর দুজন অধস্তন দেবতা নস্তু-নপান্তু এবং মা.চি জগৎ সৃষ্টিকর্মে সহায়তা করেন। দেবতা তাতারা_রাবুগার প্রায় ১২৩টির অধিক নাম রয়েছে,
তন্মধ্যে-
তাতারা_রাবুগা, বিসিক্রম_বিদাতারে, রাবুগামা_রানাগামা, স্তরা_পানতুরা, আনিং_রামদিনিমা, আম্বি_মোরি, দাকদামে, রুরিমে, দিনগিপা_বাব্রা, আইতি, বিয়াতি, জিপজিনি_জিপজানা, করাবক-করাপিন, বা.রাগিপা, চিতরাগিপা, নিরিকগিপা, জা.সাংগিপা, জাংগিনি_নকগিপা, জামানি_বিয়াম্বি, পাত্তিগিপা, রা.রংগিপা, সুউলগিপা, সান্দিগিপা, জা.রিগিপা, মারেসু_মারেবক, চানদাসি_গন.গনগ্রিগিপা, বুলগিপা, মিকফুগিপা, মিকদাকগিপা, জা.রাগিপা, জা.চিতগিপা, রাকখিগিপা, নিরকগিপা, চিজাংগিখো_রিপ্পিংগিপা, চিচ্রিখো_রাকখিগিপা, চিজাংগিখো_খানগিপা, চিচ্রিখো_অন.গিপা, জিকমিদ্দে গসাই, মা.গিপা_জাগ্রিং, ইমবানগগিপা, আজানজান_বুলজানজান, সেকিরা-বালিরা, জামানকগিপা, জাংগিনি_বিয়ামবি, ওয়াসিনি_নকসা, ওজানি_রাজা, আনিং_চারা_খামাল_খলসিফা, দাকগিপা, দালগিপা ইত্যাদি
(সুত্রঃ Apasong Agana, Chimmongipa- Dewansing S. Rongmothu এবং দ্য গারোজ- মেজর প্লেফেয়ার, খামাল দীনেশ নকরেক)।
আপফা তাতারা-রাবুগা সর্বোৎকৃষ্ট ও শক্তিধর আত্মা হিসেবে সব কিছুর তদারক করেন। মানবকল্যাণ সম্বন্ধীয় চিন্তা তাঁর নিজের বিশেষ উদ্দেশ্যের অন্তর্গত। কালাজ্বর এবং অন্যান্য স্থায়ী জ্বরসহ তিনি নানা ধরনের দুরারোগ্য অসুখ নিরাময় করে থাকেন। তাঁর উদ্দেশে নিবেদিত পূজা খুবই ব্যয়বহুল। এই পুজায় একটি ষাঁড়, একটি ছাগল ও মোরগ-মুরগি অবশ্যই তাঁর সম্মানে হত্যা করা হয় এবং দুই দিন চু এবং ভাত খাবারের ব্যবস্থা থাকে।
২) দেবী সুসিমে বা সুসিমি (Susime):
তিনি চন্দ্রের দেবী, ধন-সম্পদেরও দেবী এবং চন্দ্রদেবের প্রতিনিধি। দেবী সুসিমের অনেকগুলো নাম রয়েছে, যেমন- জাগ্রিমা_আন্দালসিকমা, আনিং রোয়েসিল চিনিং কিমেসিল, মিকনাখাদ্দক খিসাং চিদক, জিপজি_জিপজানা ইত্যাদি।
মিদ্দি সুসিমের মাতার নাম- মিদ্দি আসিমা দিংসিমা যাকে সনাকালে আবু রেনচে বলা হয়ে থাকে; এবং পিতার নাম- মিদ্দি আনিং মিক্রিমিল চিনিং চাংগ্রিমিল। দেবী সুসিমে অশিক্ষা থেকে মুক্তি, অন্ধত্ব এবং শরীরের অবশ বা পঙ্গুত্ব হওয়াথেকে রক্ষাকর্তা।
একই ভাবে তাঁকে মানবীয় ও শারীরিক প্রেম ও কাম দেবীও বলা হয়। পৃথিবী সৃষ্টির পর এ দেবী সুসিমেই মানুষকে যৌন কামনা বাসনা দান করেছেন। মানুষের যৌনদুর্বলতাতেও দেবী সুসিমেকে পুজা দিতে হয়। বাঁশের বেড়া দিয়ে গোল করে মণ্ডপ তৈরী করে একটা শূকর, একটি পেঁচা এবং কিছু মদ দিয়ে তাঁর পূজা সম্পন্ন করার বিধান আছে।
৩) মিদ্দি সালজং (Saljong):
সালজং হচ্ছে গারোদের সূর্যদেবতা, উর্বরতার দেবতা। মিদ্দি মিসি সালং-এর মাতার নাম- মিদ্দি প.ওক আ.নদক; এবং পিতার নাম মিদ্দি রিকওয়া_সানওয়া।
যিনি ফসলের যোগানদাতা এবং রক্ষাকর্তা। এই দেবতাকে পুজা না দিয়ে কেউ নতুন কোন ফসলে খেতে পারে না। তাই সালজং অবশ্যপূজ্য দেবতা। তিনি পূজিত হন সর্বদাই। কারণ সব শস্যই তাঁর নিয়ন্ত্রণে এবং তাঁর সহানুভূতি ছাড়া কোনো চাষাবাদ করা অসম্ভব।
কোনো প্রাণী বা জীবের অস্তিত্ব রক্ষা তাঁকে বাদ দিয়ে সম্ভব নয়। গারোদের সর্ববৃহৎ বার্ষিক উৎসব ওয়ানগাল্লা তাঁর সম্মানেই উৎসর্গীকৃত। কিন্তু তাঁর উদ্দেশে প্রকৃত পূজা নিবেদিত হয় মাঠে, গ্রামে উৎসব অনুষ্ঠিত হওয়ার আগে। একটি মোরগ হত্যা করে সেটির রক্ত উৎসর্গ বেদিতে ছিটানো হয়।
সামান্য মদ এই বেদির বাইরে মাটিতে এর সম্মুখে রাখা হয়। তারপর পূজারিরা ওয়ানগাল্লা উৎসবে আনন্দ উপভোগের জন্য গ্রামে ফিরে আসে। এই দেবতা থেংসুগুপা, সালগিরা, সালগ্রা, গেস রেংরা-বালসা নামেও পরিচিত।
৪) মিদ্দি আসিমা_দিংসিমা (Asima Dingsima) :
এ দেবী খুবই তেজস্বিনী এবং দেবী সুসিম্মের মাতা। যার নাম উচ্চারণ করলেই মানুষের দুর্ভাগ্য নেমে আসতে পারে বলে সাংসারেক ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস। আপাতদৃষ্টে এ রকম ধারণা করা হয় যে সুসিমি তা সহ্য করতে পারে না। আসিমা দিংসিমা তিনি সুনির্দিষ্ট কোনো কর্ম উপলক্ষে আবির্ভূত হন না।
তাই তাঁর পূজাও অনুষ্ঠিত হতে দেখা যায় না। তাঁর অনেক নাম রয়েছে- তন্মধ্যে নরেকবাক (Norekbak), নরেকদিম(Norekdim), সোনাকালি_কাবুরাঞ্চি (Sonakalie-Kaburanche) এবং মিকরংগিতক_খি.সাং_সিতক(Mikrongitok-kishang-sitok) ইত্যাদি। তাঁকে শূকর এবং মোরগ দিয়ে পুজা দিতে হয়।
৫) মিদ্দি নাওয়াং (Nawang) :
যমদূত বা মৃত্যুদূত বা জীবন হননকারী বা রাক্ষস। যিনি মানুষের আত্মাকে চিকমাং বা বালফাক্রাম পর্যন্ত নিয়ে যান। তিনি হচ্ছেন একটি খারাপ আত্মা, যিনি মানুষকে ভালো কাজথেকে বিরত রাখলে প্রলোভিত করতে পারে, স্বর্গের পথ থেকে মানুষের আত্মাকে বিতাড়িত করতে পারে। তাই ধারণা করা হয়, জীবিত মানুষকেও খারাপ পথে পরিচালিত করার জন্য নাওয়াং সর্বদায়ই সারা দুনিয়ায় ঘুরে বেড়ান। এ কাজে সে কখনো মনুষ্যরূপে কখনো শয়তান বা পৌরাণিক প্রাণীর আকৃতি নিয়ে ঘুরে বেড়ায়। ইনি মানুষের মৃত্যুশয্যায় বসে থাকেন মৃত্যুর পর তার আত্মাকে সঙ্গে নিয়ে যাওয়ার জন্য। তাই মরণশীল মানুষ তাঁর আক্রোশ থেকে মুক্তির লক্ষ্যে লোহার তৈরি একটি অস্ত্র বানিয়ে সাথে রাখেন। গারোদের বিশ্বাস; কোন এক দুষ্ট দেবী মানুষের কাছ থেকে এটা ধার করে অথবা কেড়ে নিয়ে যায় এবং দূর থেকে তা নিক্ষেপ করে বলে সেই মানুষের আত্মরক্ষার কিছুই থাকে না; ফলে মানুষের মৃত্যু হয়। গারোরা মৃতব্যক্তির সাথে মুদ্রা বা পয়সা দিয়ে থাকেন, সে মুদ্রাগুলো এই নাওয়াংকে প্রদান করতে হয়। মিদ্দি নাওয়াং মানুষের পেট ফাঁপা ধরা, পাকস্থলীর ব্যথা, বমি ও ডায়রিয়ার কারণ। তাই তাঁকে পেটের পীড়ার জন্য পুজা দেওয়া হয়।
৬) মিদ্দি চুরাবুদি (Churabudi) :
চুরাবুদি একটি প্রসন্ন আত্মার দেবতা। তিনি ধরিত্রীমাতা বা পৃথিবী পৃথিবীর বুকে শষ্য ফলে বলে চুরাবুদিকে ফসলের রক্ষাকর্তা বা শস্য দেবতাও বলা হয়। চুরাবুদি তাতারা রাবুগার আজ্ঞাবহ। আরেক দেবতা মাচির সহযোগিতায় পৃথিবী তিনি সুসজ্জিত করেন। জমির ফসল তোলার আগে চুরাবুদির জন্য পূজার আয়োজন করে তার উদ্দেশে চাল, ময়দা, তরমুজ বা খেজুর উৎসর্গ করতে হয়। অর্থাৎ যাবতীয় কৃষিজ দ্রব্যসামগ্রী তার পূজার উপকরণরূপে উৎসর্গ করাই বিধি। আর, যখন তাতারা-রাবুগার উদ্দেশে পূজা নিবেদন করা হয় তখন চুরাবুদির উদ্দেশে অবশ্যই একটি শূকর অথবা একটি মোরগ উৎসর্গ করে তাঁকে পুজা দিতে হয়। মূলত কৃষি অর্থনীতিনির্ভর সমাজের গারো অধিবাসীরা চুরাবুদির ওপর আপন সন্তোষ প্রকাশ করতেই তার পূজানুষ্ঠানের আয়োজন করে। কানের ব্যথা এবং ফোড়া ইত্যাদি রোগজনিত বেদনানাশের জন্য তার পূজা অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে।
৭) মিদ্দি দেবী নস্তু-নপান্তু (Nostu-Nopantu) :
আপফা মিদ্দি তাতারা_রাবুগার নির্দেশে মা.চির সহযোগিতায় পৃথিবী সৃষ্টিতে সহায়তাকারী বা দায়িত্বপ্রাপ্ত। তিনি পৃথিবীকে সুদৃশ্যরূপে তৈরি করেন। পৃথিবী সৃষ্টি ছাড়া তার তেমন কোনো ভূমিকাই নেই। যেহেতু তারা মানুষের কোনো ক্ষতি করে না; সেহেতু নস্তু-নপান্তু ও মা.চির উদ্দেশে কোনোরূপ পূজা অর্পণ করা হয় না।
৮) মিদ্দি গোয়েরা/গয়রা বা দুরা মিদ্দি বা রাংখান্তা (Goera.Dura) :
পরাক্রম শক্তিদেবতা, যিনি বজ্র ও বিদ্যুৎ নিয়ন্ত্রণ করেন।
দুমেরং_দুচেরং_আনিং_গ্রিং_ওয়ানা_চিনিং_গ্রিং_ওয়াচা এবং মাতার নাম- মিদ্দি কাবু রেনচে নরিম্বি দিক্কিমবি। মিদ্দি গোয়েরা হচ্ছে শক্তির দেবতা এবং বজ্র ও বিদ্যুতের উৎস বা কারণ। দীর্ঘ অসুস্থতার পরে স্বাস্থ্য ও শক্তির কামনায় তাঁর প্রার্থনা করা হয়। সব সময়ই গাছের নিচে অথবা আলাদাভাবে বেদী সাজিয়েও তাঁর পূজা উৎসর্গীকৃত হয়ে থাকে।
যখন একটি গাছ বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয় বা মারা যায় তখন এরূপ বলা হয়, গোয়েরা একে আঘাত করেছেন। এই সময় ওই গাছের শিকড়ে এই উদ্দেশে পূজা দিতে হয়, যাতে পার্শ্ববর্তী গৃহস্থদের কোনো ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। এই দেবতার পূজার সঙ্গে অরণ্যাচারী গারোদের নৈমিত্তিক জীবনের নিরাপত্তার বিষয়টি যুক্ত। একটি শূকর, একটি মোরগ তাঁর পূজায় নিবেদন করা হয়।
৯) মিদ্দি বা.গিপা বরম্বি (Ba.gipa_Borombi) :
শিশুর জীবন রক্ষাকর্তা; যাকে শিশুর জন্মের সময় মোরগ বলি দিয়ে পুজা দিতে হয়।
১০) মিদ্দি কালকামে (Kalkame) :
গারোদের বিশ্বাস, খালখামের অনুমতি সাপেক্ষে বা ইচ্ছা অনুসারে মানুষ বা প্রাণী প্রাণ হারায়। তা না হলে মানুষ মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে কষ্ট পেতে থাকে। ইনি গোয়েরার ছোটভাই। অনেক পুস্তকে এই দেবতাকে কালখামে খালগ্রা নামে উল্লেখ রয়েছে। তাঁকে গ্রাম দেবতাও বলা হয়।
এই দেবতা গ্রামের সকলকে বিভিন্ন রোগ-শোক, বিপদ-আপদ দিয়ে থাকেন এবং রক্ষাও করেন।তাই তাঁর উদ্দেশ্যে বছরে একবার আ.সংথাত্তা অথবা আ.সংকৃত্তা বা আ’সংরকা উৎসবে তাঁর প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হয়। পূজা উৎসব পরবর্তী বছর পর্যন্ত তিনি সমূহ বিপদ-আপদ থেকে গ্রামবাসীকে রক্ষা করেন।
মানুষ তাঁর নাম করে শয়তান তাড়ায়। পাথরের উপরে বেদী সাজিয়ে তাঁর পূজা অনুষ্ঠিত হয় এবং উৎসর্গীকৃত পশু বা মোরগ-মুরগির রক্তে ওই পাথর রঞ্জিত করা হয়। জীবনরক্ষাকারী দেবতা হিসেবে তাঁর পূজা অন্য দেবতাদের পূজা অপেক্ষা অধিকতর গুরুত্ব লাভ করে। কালকামের খুশির জন্য তাঁর পূজায় একটি ছাগল অথবা একটি মোরগ-মুরগি উৎসর্গ করাই নিয়ম।
১১) মিদ্দি নারেংসি (Narengsi) :
ইনি সেই দেবতা, যিনি ভূমিস্থল নির্মানের কাজে পাতালপুরীথেকে মাটি এনে দিয়েছিলেন। ইনি বা চিচিং_বারচিং নামেও পরিচিত। এই দেবতাও মানুষের কোনো ক্ষতি করে না।
১২) মিদ্দি নচী (Nochi) :
উপদেবতা; যিনি পাতালপুরীথেকে মাটি আনতে গিয়ে দেবী চি_রিম্মিৎ”এর রূপে মজে গিয়ে মাটি আনতে ভুলে গিয়েছিলেন। এছাড়া তার তেমন কোনো ভূমিকা আছে কিনা তা জানা যায় নায়। এই দেবতা মানুষের কোনো ক্ষতি করে না।
১৩) মিদ্দি ব্রারা (Brara):
মিদ্দি ব্রারা চর্মরোগের অধিকারী। মানুষের উপর তাঁর ছায়া পরলেই সারা শরীর চর্মোরোগে আক্রান্ত হয়। তাই এই দেবতাকে চর্মরোগ পালন ও রক্ষাকর্তা বলা হয়ে থাকে।
১৪) মিদ্দি দগ্নী (Dogni):
মিদ্দি দগ্নীও ব্রারার মতোই চর্মরোগের অধিকারী। মানুষের উপর তাঁর ছায়া পরলেই সারা শরীর চর্মোরোগে আক্রান্ত হয়। তাই এই দেবতাকেও চর্মরোগ পালন ও রক্ষাকর্তা বলা হয়ে থাকে। মিদ্দি ব্রারা এবং মিদ্দি দগ্নী উভয়ের ক্ষেত্রেই সিম্মা নিয়া বা রোগ পরীক্ষার করার পর মুরগী অথবা হাঁস দিয়ে পুজা করার নিয়ম প্রচলিত।
১৫) মিদ্দি নকনি বিদাওয়ি (Nokni_Bidawe):
মিদ্দি নকনি বিদাওয়ি কুদৃষ্টি মানে কোন জীবের শারীরিক ও মানসিক দুর্বলতা। অসুস্থ্যতাজনিত অথবা কোন কারণ চিহ্নিত ছাড়াই যদি কারোর শরীর শুঁকিয়ে দিন দিন দুর্বল হতে থাকে, তাহলে মিদ্দি নকনি বিদাওয়িকে একটি মোরগ দিয়ে পুজা দেওয়া হয়।
১৬) মিদ্দি বিদাওয়ি চাপিগাল (Bidawe Chapigal):
মিদ্দি বিদাওয়ি চাপিগাল অতি সুন্দরী দেবী। ইনি সৌন্দর্যের প্রতিকী হিসাবে পাহাড়ের ঝর্ণা রূপ ধারণ করে থাকেন। তাই মিদ্দি বিদাওয়ি চাপিগালকে ঝর্ণা দেবী বলা হয়; মানুষের পানির অভাব হলে বা মাটি থেকে পানি শুঁকিয়ে গেলে একটি শুকর উৎসর্গের মাধ্যমে তাঁকে পুজা দেওয়া হয়।
১৭) মিদ্দি আ.সং কোসি (A.song Kosi):
এই মিদ্দি আ’সং-ও গ্রাম রক্ষাকর্তা; ইনি কলেরা, বসন্ত ইত্যাদি রোগেরও রক্ষাকর্তা। এসব রোগ হলে মুরগী অথবা কবুতর দিয়ে তাঁর পুজা দিতে হয়।
১৮) মিদ্দি চিচানি বা চিনি (Chichani):
চিচানি মিদ্দি, যার পানিতেই বসবাস। এই মিদ্দির সর্বদা আকন্ঠ তৃষ্ণা। তাই যখনই ইচ্ছা করেন, তখনই মানুষকে পানিতে ডুবিয়ে মারতে পারেন। এই তৃষ্ণা মেটানোর জন্য প্রয়োজনে মানুষের শরীরের সমস্ত পানি বের করেন ডাইরিয়া রোগ দেওয়ার মাধ্যমে। তাই এই মিদ্দি ডায়রিয়া ও জ্বরের রক্ষাকর্তা। তাঁকে পানিতে ডুবে মৃত্যুর কারণ ও রক্ষাকর্তা বলে মনে করেন।
১৯) মিদ্দি গামিকখা (Gamikkha):
গৃহপালিত পশুপাখির রক্ষাকর্তা, পশুপাখির মড়ক লাগলে তাঁকে পুজা দেওয়া হয়। তাঁর পুজার নৈবেদ্য হিসাবে শূকর, হাঁস, মুরগী, ছাগল, ভেড়া, কবুতর ইত্যাদির যে কোন একটি বলি দিতে হয়।
২০) মিদ্দি বানফাং বাসুলি (Banfang Basuli):
মিদ্দি বানফাং বাসুলি অতি চঞ্চল, দুরন্ত দেবতা। এই দেবতার পুজার অভাব বোধ করলেই মানুষকে মৃগী রোগী বানিয়ে দেন। আবার তাঁকে পুজা দিলেই সে রোগি সুস্থ্যতা লাভ করতে পারে। তাই এই দেবতাকে মৃগী রোগের রক্ষাকর্তা হিসাবে মানা হয়।
২১) মিদ্দি বাসুলি দালগুবা (Basuli Dalguba):
মিদ্দি বাসুলি দাল্গিপা মস্তিষ্ক বিকৃতি জনিত রোগের রক্ষাকর্তা। মস্তিষ্ক বিকৃতি জনিত রোগে কেউ হারিয়ে গেলেও তাঁকে পুজা দেওয়া হয়।
২২) মিদ্দি দুমারু_চাংমারু (Dumaru_Changmaru):
উপদেবতা পাতালপুরীর দেবতা, অধিকর্তা এবং দেবী চি_রিম্মিৎ-এর স্বামী।
২৩) দেবী চি_রিম্মিত (Chi_Rimmit):
মিদ্দি দুমারু_চাংমারুর স্ত্রী; পাতালপুরীর দেবী; যার রূপে মিদ্দি নচী ভূমিস্থল নির্মানের কাজে পাতালপুরী থেকে মাটি আনতে গিয়ে ভুলে গিয়েছিলো।
২৪) মিদ্দি দরিবল্ (Doribol):
মাথা ঘোরা, প্রেসার জাতীয় রোগের রক্ষাকর্তা। মাথা ঘোরা, বমি, শরীর কাঁপুনি, অজ্ঞান হয়ে পড়লে একটি মোরগ বা মুরগী দিয়ে তাঁকে পুজা দিতে হয়।
২৫) মিদ্দি মাতচি আ.দক (A.dok):
মিদ্দি দরিবলের মতো মিদ্দি মাতচি আ.দকও মাথা ঘোরা, প্রেসার জাতীয় রোগের রক্ষাকর্তা। মাথা ঘোরা, বমি, শরীর কাঁপুনি, অজ্ঞান হয়ে পড়লে একইভাবে একটি মোরগ বা মুরগী দিয়ে তাঁকে পুজা দিতে হয়।
২৬) মিদ্দি রিসি নকমা (Risi_Nokma):
সাংসারেক ধর্মের অনেক দেবতা রয়েছেন, যারা মানুষের কোন ক্ষতি করেন না বা মানুষের সামনে যখন তখন চলে আসেন না। এই রিসি নকমাও সেরকম একজন দেবতা। মিদ্দি চুরাবুদিকে পুজা করার সময় যাকে ঘরের ভেতর পুজা দিতে হয়।
২৭) মিদ্দি জারিদ্দিং (Jaridding):
এই দেবতাও ক্ষতিকারক নন, তাই চুরাবুদির সাথে তাঁকেও স্মরণ করে সূতা বেঁধে পুজা দিতে হয়।
২৮) মিদ্দি জা.ফাকরা (Ja.fakra):
এই মিদ্দি জাফাকরাও সেরকম একজন দেবতা। যিনি মানুষের কোন ক্ষতি করেন না বা মানুষের সামনে যখন তখন চলে আসেন না। মিদ্দি চুরাবুদিকে পুজা করার সময় তাঁকেও স্মরণ করে পুজা দিতে হয়।
২৯) মিদ্দি মা.চি (Ma.chi):
সৃষ্টিকর্তা তাতারা_রাবুগার নির্দেশে নস্তু-নপান্তুর সহযোগিতায় পৃথিবী সৃষ্টিতে সহায়তাকারী বা দায়িত্বপ্রাপ্ত এই দেবী। তিনি পৃথিবীকে সুদৃশ্যরূপে তৈরি করেন। পৃথিবী সৃষ্টি ছাড়া তাঁর কোনো ভূমিকা নেই। যেহেতু তারা মানুষের কোনো ক্ষতি করে না; সেহেতু মা.চি ও নস্তু-নপান্তুর উদ্দেশে কোনোরূপ পূজা অর্পণ করা হয় না।
৩০) মিদ্দি চিপং নকমা (Chipong_Nokma):
মিদ্দি চিপং নকমার কুনজর মানুষের উপরে পরলে তাঁর হাত, পা ফুলে যায় এবং স্বাভাবিক চলাফেরা করতে পারে না। তাই হাত-পা ফোলা রোগের জন্য চিপং নকমাকে পুজা দিতে হয়।
৩১) মিদ্দি বালং বা বালফং গিত্তেল (Balong Gittel):
এই মিদ্দি চিচিং_বারচিংকে মানুষের সারা শরীর ফুলে যাওয়া রোগের কারণ মনে করা হয়। তাই এ রোগে কেউ আক্রান্ত হলে তাঁকে পুজা দিতে হয়। অনেকে চিপং নকমা এবং বালংগিত্তেলকে একই দেবতা অথবা দুই ভাই মনে করেন।
৩২) মিদ্দি মাতচা দেও (Matcha Deo):
এই দেবতার আবাস্থল জলাশয়ে বা এর কাছাকাছি বড় কোন গাছের কোঠরে। এই দেবতা কাঁচা মাছপ্রিয়। সন্ধ্যার অন্ধকারে মৎস শিকারিকে অনুসরণ করে এবং মানুষকে মাছের প্রলোভন দেখিয়ে জলে টেনে নিয়ে ডুবিয়ে মেরে ফেলতে পারে।
৩৩) মিদ্দি নজারিক_নংদিল (Nojarik Nongdil):
মিদ্দি নজারিক_নংদিলদুধ প্রিয় দেবতা। সন্তান দুগ্ধবতী মাকেও তাঁর ইর্ষা, তাই তাঁর বদ নজরে মায়েদের স্তন ফুলে যায় এবং তীব্র ব্যথায় ভুগে, তাই মা সন্তানকে বুকের দুধ কপান করাতে পারে না। তাই এই বুকে ব্যাথা এবং মহিলাদের স্তনে ব্যাথা বা দুধ ওঠার জন্য পূজনীয়।
৩৪) মিদ্দি নরে_চি.রে_কিমরে_বকরে (Nore_Chire_Kimre bakre):
এই দেবতার নামটাও কিম্ভূতকিমাকার, মিদ্দি নরে_চি.রে_কিমরে_বকরে বা নোবিচি_কিমরি_বকরি। এর কুনজরে মানুষের শরীরে প্রচণ্ড গরম হয়ে জ্বর আসতে পারে। তাই এরকম হলে তাঁকে একটি মুরগী এবং চু দিয়ে পুজা দিতে হয়।
৩৫) মিদ্দি সালারাম_সালগিৎচাক (Salaram_Salgitchak):
মিদ্দি সালারাম_সালগিৎচাক-এর অপর নাম মারাং কিপাত্তাং গাল্লানি মিদ্দি। অর্থাৎ এই দেবতা মানুষের জন্য অমঙ্গল বয়ে নিয়ে আসে। একারণে ব্যক্তি, পরিবার ও সমাজে অমঙ্গলজনক বা অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে বলে সাংসারেকদের বিশ্বাস। তাই অমঙ্গল দূর করতে এই দেবতাকে পুজা দেওয়ার রেওয়াজ। পাপ বা অমঙ্গলথেকে শুচিকরণের সিম্মা নিয়া অনুসারে ডিম অথবা মোরগ দিয়ে এই দেবতাকে পুজা দিতে হয়
৩৬) মিদ্দি দাল.আ চিরিং (Dal.a Chiring):
ক্লান্তি অবসাদ এবং পেটের পীড়ায় যাকে পুজা দিতে হয়।
৩৭) মিদ্দি নকরাম (নকগাম):
প্রচলিত আছে, এই দেবতার সারা শরীরে চুলকানি রোগে পরিপূর্ণ। তাই এই দেবতার গায়ের হাওয়া বা গন্ধ মানুষের শরীরে লাগলেই তারও চুলকানি রোগে আক্রান্ত হবে। শরীর ব্যাথা ও চুলকানির রোগে এই দেবতাকে পুজা দিতে হয়।
৩৮) মিদ্দি সালবামন বিমা (Salbamon Bima):
মিদ্দি সালবামনের কুনজরে মানুষের শরীরের ফুলে যাওয়া, হাতপা, কোমরের ব্যাথার রোগে আক্রান্ত হওয়ার কারণ। তাই কারোর শরীরের ফুলে যাওয়া, চুলকানির সাথে ব্যাথার রোগ হলেই মিদ্দি সালবামনকে একটি মোরগ একটি ছাগল উৎসর্গের মাধ্যমে এই দেবীকে পুজা দিতে হয়।
৩৯) মিদ্দি উদুম_বিমা (Udum Bima):
শরীর ফুলে যাওয়া, চুলকানির সাথে বাত ও ব্যাথাজনিত রোগ এবং পক্ষাঘাতের জন্য পুজনীয় দেবতা। একটি কালো রঙের ছাগল উৎসর্গের মাধ্যমে পুজা দিতে হয়।
৪০) মিদ্দি জাআ (Ja.a):
থেকে থেকে জ্বর, অরুচি, শরীর শুকিয়ে যাওয়াথেকে রক্ষা পেতে পুজা দিতে হয়।
৪১) মিদ্দি চিকং বা চিখং (Chikhong):
গারো ভাষায় চি মানে পানি আর খং-এর অর্থ হচ্ছে গর্ত চিখং-এর শাব্দিক অর্থ চাড়াঁইয় জলাধার। এই মিদ্দি চিখং ঠাণ্ডাজনিত জ্বরের রক্ষাকর্তা।
৪২) মিদ্দি আ.চিকরা (Achikra):
শিশুদের পাগলা ভাব বা অস্বাভাবিক আচরণের জন্য পুজা দিতে হয়।
৪৩) মিদ্দি আফুরু বা হা.ফুরু (Hapuru):
মানুষের পেটে হঠাৎ করে গ্যাস জমে ফুলে ঢোল হয়ে যেতে পারে। অন্যদিকে কানে বন্ধ হয়ে যাওয়া, ঝিন-ঝিন বা শন-শন করে আওয়াজ করা এবং কানে কম শোনা বা একেবারেই না শোনার জন্য এই মিদ্দি আফুরু দায়ী। তাই কারোর পেট ফুলে যাওয়া এবং কানে কম শোনার জন্য পূজনীয়।
৪৪) মিদ্দি মারেমু_মারেবক (Maremu_Marebok):
রকমারাঙা বা শুদ্ধিকরণ বা সংশোধনের নিমিত্তে পুজনীয় দেবতা। অমঙ্গল বা শনির প্রভাবথেকে মুক্ত হওয়ার জন্য যাকে পুজা দিতে হয়।
৪৫) মিদ্দি রংদিক (Rongdik):
ধানের ফলন দেবী, যার আশীর্বাদে ধান ভালো হয়, সংসারের অভাব দূর হয়।
৪৬) মিদ্দি নাগনি/চিপফু আমা (Nagni):
ইনি সর্পদেবী।এই দেবীকে অনেকে সাংখিনি বলে থাকেন। এর পরিচারকের নাম সুরেং রেং নামক একটি বিশাল সাপ। মিদ্দি নাগনির মনঃক্ষুণ্ণ হলে সাপেরা মানুষকে দংশন করে। তাই অকারণে সাপ মারতে নেই।
৪৭) মিদ্দি খ্রংনা বা গ্রংনা (Krongna):
ঘন জঙ্গলে চলাচল করতে হলে মিদ্দি খ্রংনা/গ্রংনা ছাড়া ভাবা যায় না। এই দেবতা মানুষকে নিরাপদে বনজঙ্গল পার করে দিতে পারেন। আর জঙ্গলের ধারেকাছে বসবাস করতে হলেতো এই দেবতা ছাড়া ছাড়া গতি নাই। তাই সাংসারেকদের বিশ্বাস, এই দেবতা জীবজন্তুর অত্যাচারথেকে রক্ষাকর্তা।
৪৮) মিদ্দি গং (Gong):
মিদ্দি গং ঐশর্যের যোগানদাতা এবং রক্ষাকর্তা; ইনিই মানুষকে ঐশর্য দান করেন।
৪৯) মিদ্দি না.মা_সুয়াংফা_না.সা_বাদানফা (Na.ma_Suangfa_Na.sa_Badanfa):
মিদ্দি না.মা সুয়াংফা না.সা বাদানফা হচ্ছেন মাছের দেবতা; জলজ প্রাণীর পালনকর্তা। মতান্তরে মিদ্দি না.মা সুয়াংফা না.সা বাদানফা একই দেবতার নাম নয়; অর্থাৎ এক্ষেত্রে না.মা_সুয়াংফা এবং না.সা_বাদানফা নাম হবে কিনা এই তথ্যটি পরবর্তী প্রকাশনার অপেক্ষা করতে হতে পারে।
৫০) মিদ্দি থেংআ (Theng.a):
ইনি আলোকবর্তিকা দেবী। বিপদের বন্ধু। মানুষকে বুদ্ধি পরামর্শ দিয়ে মিদ্দি থেংআ আলোর পথে নিয়ে চলতে চান।
৫১) মিদ্দি টংরেমা (Tongrema):
বিভিন্ন জলাধার; যেমন নদী, খাল, বিল, পুকুর, মান্দা ইত্যাদি স্থানে এই দেবির আবাস্থল। ইনি ছোট ছেলেমেয়ে এবং ভীতু লোকদের ভয় (থরা’স) দেখিয়ে থাকেন। মিদ্দি টংরেমাকে মোরগ দিয়ে পূজা দিতে হয়।
৫২) মিদ্দি আল্লেমী (Allemi):
দেবী আল্লেমী সকল দেবদেবির রানীও বলা হয়। ইনি মানুষের দেহে নানা প্রকার রোগ-শোক, ব্যাথা-বেদনার কারণ।
৫৩) মিদ্দি মেগাফাপি.আ (Megafapia):
এ দেবিও মিদ্দি বা.গিপা বরম্বির মতোই শিশুর জীবন রক্ষাকর্তা; যাকে শিশুর জন্মের সময় পুজা দিতে হয়। সন্তান জন্মের সময় গর্ভবতী মায়ের কষ্টের সময় এই দেবীকে স্মরণ করা হয়। প্রচুর পরিমাণে মদ দিয়ে এই দেবতাকে পূজা দিতে হয়।
৫৪) মিদ্দি আন্নিং (Anning):
বাচ্চাদের মাথা ব্যাথা এবং চুল পড়ার কারণ। তাঁকে শূকর এবং মদ দিয়ে পুজা দিতে হয়।
৫৫) মিদ্দি চুরাসি (Churasi):
ছেলেমেয়েদের পেটের পীরায় এই দেবিকে মোরগ, মদ উৎসর্গের মাধ্যমে পুজা দিতে হয়।
৫৬) মিদ্দি চাগপ (Chagop):
চাগপ দেবতার কুনজরে মানুষের পা প্রচুর পরিমানে ঘামে এবং মানুষের শরীরকে প্রচণ্ডভাবে দূর্বল করে দিতে পারে। তাঁর পূজায় শূকর অথবা মোরগ দিতে হয়।
৫৭) মিদ্দি দালওয়া জাঙ্গুম/চিরিং (Jangum) :
এই দেবতাও মানুষের শরীরকে প্রচণ্ডভাবে দূর্বল করে দিতে পারে।
৫৮) মিদ্দি চিগিতচাক (Chi_Gitchak):
এই দেবতা কুনজরে মানুষ বাত-বেদনায় ভুগে থাকে। এই দেবতাকে ষাঁড় গরু অথবা শুকড় উৎসর্গের মাধ্যমে পুজা দিতে হয়।
৫৯) মিদ্দি জগু (Jogu):
বুকে এবং পিঠের ব্যাথার কারণে শ্বাসকষ্ট হলে তাঁকে পুজা দিতে হয়। এই দেবতাকে শুকর, মোরগ উৎসর্গের মাধ্যমে পুজা দিতে হয়।
৬০) মিদ্দি বিদাওয়ি_চিবল (Bidawee Chibol):
মিদ্দি শব্দের অর্থ দেবতা। বিদাওয়ি_চিবল হচ্ছে দেবতার নাম। সাংসারেক ধর্মাবলম্বি গারোদের বিশ্বাস অনুসারে, মিদ্দি বিদাওয়ি চিবল শরীর ফোলা এবং সুতিকা জাতীয় রোগের রক্ষাকর্তা। এই দেবতার আমুয়ার (পূজার) জন্য দুটি মোরগ, একটি শূকর, এবং একটি হাঁড়ি চু-এর (গারোদের তৈরী একপ্রকার পানীয়) প্রয়োজন হয়।
৬১) মিদ্দি আজিম রাজা (Ajim Raja):
আজিম রাজা; পাতালে অবস্থানকারী। এই আজিম রাজা তার স্ত্রী সেং.চীর সাথে পাতালপুরীতে অবস্থান করেন, এবং এরাই পশু-পাখির লালন ও পালনকারী। পৃথিবী সৃষ্টির পর এই দম্পতিই মানুষকে খাবার এবং লালন পালনের জন্য পশু পাখি দিয়েছেন।
৬২) মিদ্দি সেং.চি (Seng.chi):
মিদ্দি সেং.চি একজন দেবী এবং পাতালে অবস্থানকারী আজিম_রাজার স্ত্রী। এরাই পশু-পাখির লালন ও পালনকারী।
৬৩) মিদ্দি গঙ্গা/ গঙ্গা_ত্রিতফা (Ganga) :
ঐশ্বর্যের দেবতা। মিদ্দি গং বা গঙ্গা জুম চাষের প্রবর্তক এবং তুলা চাষের প্রবর্তক। মিদ্দি গঙ্গার মায়ের নাম- মিদ্দি উনে_নারে_আসারে_দিংসারে; এবং পিতার নাম- মিদ্দি রুকা_উইলজাং_আগক_দিগক।
৬৪) মিদ্দি রোক্কিমা (Rokkima) :
ধানের দেবী। ধারণা করা হয় হিন্দু ধর্মের লক্ষ্মী দেবীই রোক্কিমা নামে গারোরা পূজা করে।
৬৫) মিদ্দি বালওয়া/বালমন্দ্রি (Balwa_Balmondri):
বায়ু ও ঝড়ের দেবতা। প্রবল ঝরের তাণ্ডব হতে গ্রামবাসীকে বাঁচানোর জন্য এই দেবতাকে সিম্মা নিয়া অনুসারে দেবতার চাহিদা অনুসারে গৃহপালিত পশুপাখি বলি দিয়ে পুজা দিতে হয়।
৬৬) মিদ্দি গ্রো_চাআনি (Gro Cha.ani):
মানুষের সমাজে অর্থদন্ড দেওয়া হলে এই দেবতাকে স্মরণ করা হয়, যেন পুনরায় অর্থদণ্ডের মত কোন দুর্ঘটনা না ঘটে।
৬৭) মিদ্দি আবেত রেঙ্গে (Abet_Renge):
আসিমা_দিংসিমার মতো শক্তিধারী দেবতা; অথবা আসিমা দিংসিমার আরেক রূপ। এই দেবতাকে অপমান করলে কঠিন অসুখ হয় এবং এই অসুখ থেকে মৃত্যুও হতে পারে।
৬৮) মিদ্দি পাত্তাংগ্নি বা পাচ্চাংগ্নি (Patchanggni):
গারো ভাষায় গ্নি মানে হচ্ছে দুই সংখ্যা। যে কোন মানুষের হাতে ও পায়ের হাড়ের সন্ধিস্থলে ব্যথা হতে পারে। তাই হাটু ও পেশীর ব্যাথায় মোরগ দিয়ে পুজা দিতে হয়।
৬৯) মিদ্দি কুবেরা (Kubera) :
পাতালের দেবতা। পাতালের সঞ্চিত অর্থ পাহারা দেন। হিন্দু পৌরাণিক চরিত্র কুবের-এর সাথে এর মিল রয়েছে বলে অনেকে মনে করেন।
৭০) মিদ্দি পিৎরাংফা (Pitratfa):
এই দেবতা সেংরাংফাও বলা হয়। চর্মরোগের কারণে একটি মোরগ দিয়ে পুজা দিতে হয়।
৭১) মিদ্দি আপিতফা (Apitfa):
এলার্জির কারণে শরীর চুলকানো রোগের কারণে একটি কবুতর দিয়ে পুজা দিতে হয়।
৭২) মিদ্দি বুরুম্বি/বাগুবা (Burumbi):
মাৎচা, মাকবুল, চিপ্পু, হারিঙ্গা, চিনি জ’অং পালনকারী দেবতা।
৭৩) মিদ্দি গ্রাগসি (Graksi):
বুকে ব্যাথা বা নিমোনিয়ার ধারক ও বাহক। বাঁশ দ্বারা সাম্বাসিয়ার মাধ্যমে মোরগ এবং মদ দিয়ে পুজা দিতে হয়।
৭৪) মিদ্দি রাকগাসি (Rakgasi):
এই মিদ্দি রাগগাসি ধুমকেতু বিশেষ। সোনারূপার মালিক বা বহনকারী। তার কাছে সম্পদ এবং এর নিরাপত্তা চাওয়া হয়। এই দেবতাকেও একটা মোরগ অথবা একটা কবুতর ও চু দিয়ে পূজা দিতে হয়।
৭৫) মিদ্দি খেতল/কেত্তর (Kettor):
এই দেবতা শুকড়ের পরিচালক। পশু শিকার না মিললে অথবা শিকারের আগে এই দেবতাকে একটি মোরগ দিয়ে পুজা দিতে হয়।
৭৬) মিদ্দি দো.জং/দিজং (Do.jong):
জ্বরের কারণে এই দেবতাকেও পুজা দিতে হয়। এই পুজায় একটি মোরগ উৎসর্গ করতে হয়।
৭৭) মিদ্দি ফোজো (Fojou):
সন্তান উৎপাদনের দেবী। এই দেবতাকে একটি মোরগ দিয়ে পুজা দিতে হয়।
৭৮) মিদ্দি আগপফা (Agopfa):
এই দেবতা ফরিং-এর পরিচালক। শরীর চুলকানো রোগের কারণে একটি ফরিং অথবা একটি মোরগ দিয়ে পুজা দিতে হয়।
৭৯) মিদ্দি তেংগাজা (Tengaja):
জিন-পরির দেবী। প্রচলিত জিন-পরির আচর নাকি এই মিদ্দি তেংগাজা বা তাঁর উপদেবতাদের কারণে হয়ে থাকে। এই দেবীকে ছাগল, কবুতর, সিঁদুর এবং ধুপারতি দিয়ে পুজা দিতে হয়।
৮০) মিদ্দি গদাংফা (Godangfa):
শরীরের বিষ ব্যাথায় এই দেবতাকে একটি মোরগ দিয়ে পুজা দিতে হয়।
৮১) মিদ্দি টিকরে (Tikre):
মিদ্দি টিকরে একজন দেবী। অসুস্থতার কারণে এই দেবীকে একটি মুরগী দিয়ে পুজা দিতে হয়।
৮২) মিদ্দি টিকসে (Tikse):
মিদ্দি টিকসে একজন দেবতা; এবং মিদ্দি টিকরের স্বামী। অসুস্থতার কারণে রোগীর হাত পা বাঁকা হয়ে গেলে এই দেবতাকে একটি মোরগ দিয়ে পুজা দিতে হয়।
৮৩) মিদ্দি রুরুবে_কিন্নাসে (Rurube_Kinnase):
শিশুদের অসুস্থ্যতা এবং অস্বাভাবিক আচরণের একটি মুরগীর ডিম দিয়ে এই দেবতাকে পুজা দিতে হয়।
৮৪) মিদ্দি ক.সাপিক_কসাপিন (Kosapik_Kosapin):
পেট ফাঁপা এবং ব্যাথার কারণে একটি কবুতর দিয়ে এই দেবতাকে পুজা দিতে হয়।
৮৫) মিদ্দি সিম্বু (Simbu) :
পেটের ব্যাথার কারণ, ভাত দিয়ে পুজা দিতে হয়।
৮৬) মিদ্দি জিকমিদ্দি (Jikmiddi):
গারো ভাষায় জিক মানে হচ্ছে স্ত্রী। অর্থাৎ এই দেবী গৃহদেবতার স্ত্রী একজন স্ত্রী। ইনি মানুষের ঘরের কোনায় বা এর আশেপাশের থাকতে পছন্দ করেন।
৮৭) মিদ্দি বুদবিমা (Budbima) :
মাথা ঘোরা এবং অসুস্থ্যতার জন্য এই দেবীকে একটি মুরগি দিয়ে পুজা দিতে হয়।
৮৮) মিদ্দি মেংগং (Mengong) :
বিড়ালের আচড়ের মতো পেটের ব্যাথার কারণ, একটি পুষ্ট মুরগীর ডিম দিয়ে মিদ্দি মেংগংকে পুজা দিতে হয়।
৮৯) মিদ্দি রাক.গাআল (Rakga.al) :
হাটু ও পেশীর ব্যাথায় মোরগ দিয়ে পুজা দিতে হয়।
৯০) মিদ্দি নোয়েরি সিমেরি (Noyeri Simeri) :
ক্ষতিকারক দেবী। জ্বরের কারণে এই দেবীকে পুজা মুরগী এবং হাঁস দিয়ে পুজা দিতে হয়।
৯১) মিদ্দি মিন্নামিদ্দি (Minnamiddi) :
পেট ফোলা এবং পেট ফাঁপা রোগে মোরগ দিয়ে পুজা দিতে হয়।
৯২) মিদ্দি দুআদাক (Du.a dak) :
বাঁশের চুঙ্গা বানিয়ে মোরগ দিয়ে উপাস্য। গলা ব্যাথার জন্য পুজা দিতে হয়।
৯৩) মিদ্দি জগুরংসিল (Jogurongsil) :
বাঁশ দিয়ে সাম্বাসিয়া করে মোরগ দিয়ে পুজা দিতে হয়
৯৪) মিদ্দি দারিচিক নকসাম (Darichik Noksam) :
মিদ্দি দারিচিক বিমা- গর্ভবতীর বাচ্চা সুস্থ্যতা এবং সুস্থ্য প্রসবের উদ্দেশে এই দেবতাকে মুরগী দিয়ে পুজা দিতে হয়।
৯৫) মিদ্দি দারিচিক রামা (Ramani Darichik) :
পুরুষ দেবতার নাম গর্ভবতীর বাচ্চা সুস্থ্যতা এবং সুস্থ্য প্রসবের উদ্দেশে এই দেবতাকে মুরগী দিয়ে পুজা দিতে হয়।
৯৬) মিদ্দি ওয়া.সঙা (Wa.song.a) :
বাঁশের অধিকর্তা। গিরায় গিরায় ব্যাথা প্রশমনে এই দেবতার পুজা দিতে হয়।
৯৭) মিদ্দি জা.ফাগাল ( Ja.pagal) :
পেট ব্যাথার কারণে ছোট ছোট চাটাই বুনে তেরাস্তার মোরে রাস্তার মাঝখানে মোরগ দিয়ে পুজা দিতে হয়।
৯৮) মিদ্দি বিদায়ি চা.পিগাল (Bidayi Cha.pigal) :
ক্লান্তি এবং জ্বরের কারণে দুটি মোরগ ও মুরগী দিয়ে এই দেবতাকে মুরগী দিয়ে পুজা দিতে হয়।
৯৯) মিদ্দি বিদায়ি চিবল (Bidayi Chibol) :
শরীর ফুলে গেলে হাত-পা ফুলে গেলে দুটি মোরগ-মুরগী, মদ এবং শুকড় অথবা ছাগল দিয়ে বিলের ধারে পুজা দিতে হয়।
১০০) মিদ্দি দুআজাক (Du.aJak) :
জ্বরের কারণে রোগি শুকিয়ে গেলে একটি হাঁস এবং একটি মোরগ দিয়ে পুজা দিতে হয়।
১০১) মিদ্দি আত্তিচেল্লা (Attichella) :
কেউ অসুস্থ্য হয়ে পরলে একটি ছাগল এবং একটি মোরগ দিয়ে পুজা দিতে হয়।
১০২) মিদ্দি বংসি/ বংসি_ঠাকুর (Bongsi Thakur) :
এই দেবতাকে ক্লান্তি, অবসাদের কারণে জ্বরের কারণে একটি মোরগ দিয়ে পুজা দিতে হয়।
১০৩) মিদ্দি চেনদিকুরি (Chendikuri) :
অসুস্থ্যতার কারণে হাত-পা বাঁকা হয়ে গেলে মিদ্দি চেনদিকুরিকে একটি মোরগ দিয়ে পুজা দিতে হয়।
১০৪) মিদ্দি হা.নি মাতচি (Ha.ani Matchi) :
সাম্বাসিয়ার মাধ্যমে জ্বরের কারণে, বারবার দুঃস্বপ্ন দেখতে থাকলে মিদ্দি হা.নি মাতচিকে একটি মোরগ দিয়ে পুজা দিতে হয়।
১০৫) মিদ্দি দাগগিবা বিতচিমা (Daggiba Bitchima) :
কাঁপুনি দিয়ে জ্বরের কারণে মিদ্দি দাগগিবা বিতচিমাকে একটি মোরগ ও একটি হাঁস দিয়ে পুজা দিতে হয়।
১০৬) মিদ্দি জা.গিপাং (Ja.gipang) :
জ্বরের কারণে মিদ্দি জা’গিপাংকে মোরগ অথবা ছাগল অথবা হাঁস দিয়ে পুজা দিতে হয়। তবে এর উপরোক্ত যে প্রাণীই হোক না কেন, এদের সাথে একটি মোরগ অবশ্যই থাকতে হবে।
১০৭) মিদ্দি নক.গাম (Nok.gam)
হাতপা ঝিঝি ধরা, চাবানো ব্যাথার কারণে একটি মোরগ অথবা ছাগল অথবা হাঁস দিয়ে পুজা দিতে হয়।
১০৮) মিদ্দি দা.গাল (Da.gal) :
নতুন জমিতে চাষের আগে বা ধানের বীজ রোপনের আগে এই দা.গাল মিদ্দিকে একটি ডিম দিয়ে পুজা দিতে হয়।
১০৯) মিদ্দি দেন.দামবাক (Den_dambak) :
প্রতি সন্ধ্যার দিকে হাতপা ঝিঝি ধরা, চাবানো ব্যাথা হয়ে জ্বরের কারণে একটি মোরগ দিয়ে পুজা দিতে হয়। বিকাল বা সন্ধ্যার দিকেই এই পুজা অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে।
১১০) মিদ্দি বানপাং (Banpang) :
এই দেবতা গুদ্দক রোগুবা (Guddok Roguba) এবং ময়লা নামেও পরিচিত। তবে এই দেবী একা নন; এরা সাত বোন। এই দেবতাদের কাজ হলো শিশুদের কাঁদানো, ভয় দেখানো, পাগল করা এবং গর্ভাবস্থায় নষ্ট করা ইত্যাদি করতে পারে। অবস্থাভেদে (সিম্মা দেখার মাধ্যমে) এই দেবতাদের উদ্দেশে হাস-মুরগী অথবা হাঁস-ছাগল দুটো করে (একসাথে দুটো প্রাণী) উৎসর্গের মাধমে এ দেবীদের পুজা দিতে হয়।
১১১) মিদ্দি জাজং (Jajong) :
মিদ্দি জাজং দেবী সুসিম্মের অন্তর্ভূক্ত দেবতা।
১১২) মিদ্দি বন.চেও (Boncheo) :
চোখের ব্যাথার কারণে একটি মোরগ দিয়ে মিদ্দি বন.চেওকে পুজা দিতে হয়।
১১৩) মিদ্দি দুরা_আমবিসি (Dura Ambisi) :
মিদ্দি দুরা_আমবিসিকে মিদ্দি দুরেং_আম্বিসিও বলা হয়। এই দেবতাকে একটি মোরগ অথবা হাঁস দিয়ে পুজা দিতে হয়।
১১৪) মিদ্দি বারিংখল (Baringkol) :
চাষাবাদের সময় চাষের শুরুতে জমির শুচীকরণ করতে ৩ থেকে ৫ দিনের মধ্যে এই দেবতাকে পুজা দিতে হয়। এর পুজায় একটি মোরগ লাগে।
১১৫) মিদ্দি গি.রাম/গিআরাম (Ge.ram) :
এই দেবতাকে অসুস্থ্যতার কারণে পুজা দিতে হয়। এর পুজায় একটি মোরগ বলি দিতে হয়।
১১৬) মিদ্দি চু.আল আচাক (Chu.al achak) :
শরীর ব্যাথা, বমি বমি ভাব এসে কেউ অসুস্থ্য হয়ে পরলে একটি কুকুরের বাচ্চা বলি দিয়ে এই দেবতাকে পুজা দিতে হয়।
১১৭) মিদ্দি চু.আল দোঅ (Chu.al Do.o) :
হাত পা জ্বালায় একটি মোরগ দিয়ে এর নৈবেদ্য দিতে হয়।
১১৮) মিদ্দি চিচানি দ.গক (Chichani Dogok) :
সন্ধ্যার দিকে জঙ্গল, বিল বা পুকুরের পাড়ে, বাঁশের ঝাড়ে যেতে নেই। সেসময় কেউ অজ্ঞান হয়ে গেলে এই দেবতাকে একটি ছাগল দিয়ে এই দেবতাকে পুজা দিতে হয়।
১১৯) মিদ্দি চিচানি দো.গুগু (Chichani Do.gugu) :
সন্ধ্যা বা অন্ধকারে অপ্রাকৃত কিছু বা মানুষের ছায়ামূর্তি দেখলে। ভয় পেলে একটি কবুতর দিয়ে এই দেবতাকে পুজা দিতে হয়।
১২০) মিদ্দি চি.ব্রেং (Chi.breng) :
হাত পা জ্বালা যন্ত্রনায় একটি ছাগল দিয়ে এ মিদ্দি চি.ব্রেংকে পুজা দিতে হয়।
১২১) মিদ্দি বাঙ্গালস্নি (Bangal Snee) :
ছোট করে ঘরের মত বেদি তৈরী করে জ্বর এবং হাত পা জ্বালা যন্ত্রণা ইত্যাদি সমস্যায় একটি কবুতর অথবা একটি মোরগ দিয়ে মিদ্দি বাঙ্গালস্নিকে পুজা দিতে হয়।
১২২) মিদ্দি রিসি নকমা (Risi Nokma)
মিদ্দি রিসি নকমা একজন দেবী এবং মিদ্দি দিমারিসির স্ত্রী; অথবা বলা যায় তিনি ঘরের কর্তৃ। শরীর ব্যথায় একটি ছাগী এবং একটি মোরগ দিয়ে এই দেবতাকে পুজা দিতে হয়।
১২৩) মিদ্দি মিগগাসি (Miggasi) : অসুস্থ্যতার কারণে একটি মোরগ দিয়ে মিদ্দি মিগগাসিকে পুজা দিতে হয়।
১২৪) মিদ্দি সালবামন ফ্রিং (Salbamon Pring) :
প্রতি সকালে অসুস্থ্যতার কারণে একটি মোরগ দিয়ে এই দেবতাকে পুজা দিতে হয়।
১২৫) মিদ্দি সালবামন হা.নতাম (Salbamon Hantam) : প্রতি বিকালে বা সন্ধ্যার দিকে রোগী অসুস্থ্যবোধ করার কারণে একটি মোরগ দিয়ে পুজা দিলে মিদ্দি সালবামন হানতাম তুষ্ট হন।
১২৬) মিদ্দি দাল.আ চিরিং (Dal.a Chiring) :
মিদ্দি দাল.আ চিরিংকে ক্লান্তি অবসাদের কারণে হাঁটাচলায় সমস্যার কারণে একটি মোরগ অথবা একটি হাঁস দিয়ে পুজা দিতে হয়।
১২৭) মিদ্দি সুয়াবারি জংগ্রিম (Suabari Jangrim)
টাইফয়েড বা অন্যান্য জ্বরের কারণে একটি মোরগ দিয়ে এই মিদ্দি সুয়াবারি জংগ্রিমকে পুজা দিতে হয়।
১২৮) মিদ্দি রাগগাসি পাতচাংগ্নি (Raggasi Patchang’gni) :
মিদ্দি রাগগাসি পাতচাংগ্নিকে ঘরের অমঙ্গল দূরীকরণে সিদ্ধহস্ত। তাই এই দেবতাকে একটি মোরগ দিয়ে পুজা দিতে হয়।
১২৯) মিদ্দি জারিদ্দিং রা.আল (Jariding Ra.al) :
এই দেবতাকে কোন গর্ভস্থ শিশুর আত্মা অন্যের গর্ভে যাতে স্থানান্তর না হয় বা গর্ভের সন্তান যাতে নষ্ট না হয় সেজন্য একটি মোরগ দিয়ে পুজা দিতে হয়।
১৩০) মিদ্দি দো.মাল (Do.mal) : প্রচণ্ড মাথা ব্যাথা সহ জ্বরের কারণে মিদ্দি দো.মালকে একটি মোরগ দিয়ে পুজা দিতে হয়।
১৩১) মিদ্দি সুসিমে হান.থাম (Susime Hantam):
সকালে এবং সন্ধ্যায় বার বা অসুস্থ্য হলে একটি মোরগ দিয়ে এই দেবতাকে পুজা দিতে হয়।
১৩২) মিদ্দি পাত্তাংগ্নি (Pattang_gni) :
হাটু ও পেশীর ব্যাথায় মোরগ দিয়ে এই দেবতাকে পুজা দিতে হয়।
১৩৩) মিদ্দি বুরগুদ্দক (Burgidok) :
কাশির জন্য এই দেবতাকে পুজা দিতে হয়।
১৩৪) মিদ্দি গনচু হা.দক (Gonchu Ha.dok) :
মাথা ব্যথা ও অস্বাভাবিক আচরণের জন্য মোরগ দিয়ে এই দেবতাকে পুজা দিতে হয়।
১৩৫) মিদ্দি গনচু নকসাম (Gonchu Noksam)
শরীর কেঁপে কেঁপে সারা শরীরের বিষ ব্যথায় মোরগ দিয়ে এই দেবতাকে পুজা দিতে হয়।
১৩৬) মিদ্দি গালমাকদুয়া (Galmakdua):
জ্বর হলে ছাগল পাঁঠা অথবা শূকর দিয়ে এই দেবতাকে পুজা দিতে হয়।
১৩৭) মিদ্দি রাংনোখল (Rangkhonol) :
হাত, পা ও কোমরের হাড়ের ব্যাথায় একটি পাঁঠা ও একটি মোরগ দিয়ে এই দেবতাকে পুজা দিতে হয়।
১৩৮) মিদ্দি অলিবক (Olibok) :
জণ্ডিস হলে একটি মোরগ অথবা কবুতর দিয়ে এই দেবতাকে পুজা দিতে হয়।
১৩৯) মিদ্দি চিনাবেং (Chinabeng:)
শরীর জ্বালাপোড়াসহ জ্বর হলে একটি ছাগী এবং একটি মোরগ দিয়ে এই দেবতাকে নদীর ধারে পুজা দিতে হয়।
১৪০) মিদ্দি রেব্বক মে.চিক (Rebbok Me.chik) :
হাটু ও পেশীর ব্যাথায়ঘরে বা পরিবারে অমঙ্গল বা প্রলোভনের কারণে অস্বস্তিকর অবস্থায় পতিত হলে একটি মুরগী এবং একটি চু/পানীয় দিয়ে এই দেবতাকে পুজা দিতে হয়।
১৪১) মিদ্দি সালবঙ্গি (Salbongi) :
দুঃস্বপ্ন বারবার দেখতে থাকলে অমঙ্গলের আশঙ্কায় একটি পাঁঠা এবং একটি মোরগ অথবা মুরগী দিয়ে এই দেবতাকে পুজা দিতে হয়।
১৪২) মিদ্দি কান.তাব গোয়েরা (Kan.tab Goyera):
স্বপ্নাদিষ্ট হয়ে পরিবারের সকলের সুস্বাস্থ্য কামনায় একটি শূকর এবং একটি মোরগ দিয়ে এই দেবতাকে পুজা দিতে হয়।
১৪৩) মিদ্দি নক_ওয়ালজক্কানি (Nok_Waljokkani):
কারোর ঘরে আগুন লাগার পর রকমারাঙা হিসাবে একটি ডিম দোরাসং দেখার জন্য একটি মোরগ দিয়ে এই পুজা দিতে হয়।
১৪৪) মিদ্দি গান্দি গল.দাক (Gandi Gol.dak) :
ছেলের মেয়েদের অসুস্থ্যকালীন সময়ে কারোর গলা, গাল ইত্যাদি ফুলে গেলে একটি মুরগী দিয়ে এই দেবতাকে পুজা দিতে হয়।
১৪৫) মিদ্দি আমিন্দা (Aminda) :
মাথা ঘুরার কারণে একটি মোরগ দিয়ে এই দেবতাকে পুজা দিতে হয়।
১৪৬) মিদ্দি মিন্নামিদ্দি (Minna Middi) :
কেউ অসুস্থ্য হয়ে বারবার অজ্ঞান হয়ে পড়লে একটি মোরগ দিয়ে এই দেবতাকে পুজা দিতে হয়।
১৪৭) মিদ্দি হা.সংদেন্না (Ha.song Den.a) :
জুম চাষের পূর্বে উক্ত জমিতে ফলন ভালো হবে কিনা পরীক্ষা করতে কেঁচোর মাটি ছোট্ট ডালে রেখে এই দেবতাকে স্মরণ করে চুগারিয়া করতে হয়।
১৪৮) মিদ্দি দারিচিক দো.মি (Darichik Domi) :
মেয়েদের গর্ভাবস্থায় এই দেবতাকে একটি মোরগ দিয়ে পুজা দিতে হয়।
১৪৯) মিদ্দি মিরিসি/মিরিতি (Mirisi/Miriti): মেয়েদের গর্ভাবস্থায় বারবার দুঃস্বপ্ন দেখে অমঙ্গলের আশঙ্কায় একটি মুরগী দিয়ে এই দেবতাকে পুজা দিতে হয়।
১৫০) মিদ্দি বা.গিবা (Ba.giba):
জুম ক্ষেতে ভালো ফলনের আশায় আষাঢ় মাসের ৭ তারিখের মধ্যে একটি মোরগ দিয়ে এই দেবতাকে পুজা দিতে হয়।
১৫১) মিদ্দি বরিসাল (Borisal):
অসুস্থ্যকালীন অস্বাভাবিক আচরণ করলে একটি পাঁঠা এবং চু/পানীয় সহ ১৪টি মোম, ১৪ আগরবাতি, ৭টি মাটির হাঁড়িতে ধূপ জ্বালিয়ে এই দেবতাকে পুজা দিতে হয়; এই পুজার সময় খামাল মন্ত্র পড়ে একজোড়া কবুতরের কপালে সিঁদুর দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়।
১৫২) মিদ্দি দেন.বিলসিয়ানি (Den.bil Siani):
গ্রামবাসীর কারোর পাপ কলঙ্ক মোচনের উদ্দেশে এবং গ্রামের ভেতর কোন অমঙ্গল যেন প্রবেশ করতে না পারে, দেবতাকে তুষ্ট করতে এবং পাপ বা কলঙ্ক মোচনের জন্য এই দেবতার নামে দেনমারাঙার পূজায় একটি লাল রঙের ষাঁড় বাছুর বলি দিতে হয়। দো.বুক পরীক্ষা করার জন্য ১টা লাল মোরগ এবং নিজেদের তৈরী করা চু (পানীয়) আবশ্যক।
১৫৩) মিদ্দি মিকাচু (Mijachu): এই দেবতাকে একটি ছাগী, একটি মোরগ এবং একটি ডিম দিয়ে পুজা দিতে হয়।
১৫৪) মিদ্দি পত্তিম (Pottim):
ধানের শিষে মড়ক লাগলে একটি মোরগ দিয়ে এই দেবতাকে পুজা দিতে হয়।
১৫৫) মিদ্দি রংচাঙা (Rongchanga):
একটি মোরগ ও একটি ডিম দিয়ে পরিবারের মঙ্গল কামনায় এই দেবতাকে পুজা দিতে হয়।
১৫৬) মিদ্দি হিরা_কুচ্ছুনি (Hira_Kucchuni):
মাথাঘুরা এবং অজ্ঞান হলে একটি মোরগ দিয়ে এই দেবতাকে পুজা দিতে হয়।
১৫৭) মিদ্দি বারোবাই_বারপচ্চিম (Barbai_barpochchim) :
জুমচাষের আগে ৯টি মোরগ এবং পানীয় দিয়ে এই দেবতাকে পুজা দিতে হয়।
১৫৮) মিদ্দি সাগাল পান্থি (Sagal Panthi) :
ইনি জলের দেবতা। একটি মোরগ দিয়ে এই দেবতাকে পুজা দিতে হয়।
১৫৮) মিদ্দি হাংকি (Hangki):
জ্বরের সময় রোগীর হাত ও পা শুকিয়ে বাঁকা হয়ে গেলে ৭টি কাঁকড়া এবং চু/পানীয় দিয়ে এই দেবতাকে পুজা দিতে হয়।
১৬০) মিদ্দি চ.লসি (Cholsi):
শরীর শুকিয়ে রোগী দূর্বল হয়ে পড়লে একটি মোরগ দিয়ে এই দেবতাকে পুজা দিতে হয়।
১৬১) মিদ্দি তিত্তিক (Tittik):
পোলিয় জাতীয় রোগে আক্রান্ত হলে একটি বা দুইটি কবুতর দিয়ে এই দেবতাকে পুজা দিতে হয়।
১৬২) মিদ্দি চান্দ/চান্দা (Chando) :
হাটু প্রস্রাবের সময় ব্যথা হলে একটি মুরগী দিয়ে ধূপ জ্বালিয়ে এই দেবতাকে পুজা দিতে হয়।
১৬৩) মিদ্দি রিসিফ্রিং (Risipring):
একশিরা জাতীয় রোগের কারণে একটি মোরগ দিয়ে এই দেবতাকে পুজা দিতে হয়।
১৬৪) মিদ্দি গামুকখা গাওয়ালি (Gamukkha Gawali):
শরীর জ্বালাপোড়ায় একটি মোরগ এবং চু/পানীয় দিয়ে এই দেবতাকে পুজা দিতে হয়।
১৬৫) মিদ্দি সিমে রানজে (Sime Ranje):
কাবু রেনচে নরিম্বি দিক্কিমবি বালংগ্রি বালংজাফ নামেও পরিচিত। ইনি মিদ্দি গয়েরার মা; মিসি আরাকফা সালজং গিংমাতফার কন্যা।
১৬৬) মিদ্দি দুমেরং দুছেরং আনিংগ্রিং ওয়ানা চিনিংগ্রিং ওয়াচা:
রিকবোথাং নামেও পরচিত। ইনি মিদ্দি গয়েরার বাবা।
১৬৭) মিদ্দি অকবংজাদা_ওয়াকখি_ওয়ানেল (Okbong Jada Wakki Wanel):
দুরাত্মা, ধন সম্পদশালী দুরামা_ইম্বাম্বার বখে যাওয়া পুত্র।
১৬৮) মিদ্দি রুদা মে.য়া_সলদা_ফান্থে (Ruda me.a_Solda Pante):
মাছের রাজা অর্থাৎ মৎস গোষ্ঠীর প্রধান মিদ্দি গঙ্গার সহকারি দেবতা।
১৬৯) মিদ্দি আরাতছা_রংবারে (Aratcha Rongbare):
ক্ষতিকারক দেবী। এই দেবী রাতের অন্ধকারে ঘুরে বেড়ায় এবং গৃহস্তের ধন চুরি করে নিয়ে যায়।
১৭০) মিদ্দি খোয়াসি_মিন্দুরী (Khoasi Minduri):
মিদ্দি আরাৎছা_রংবারে-এর ছোটবোন। সেও ক্ষতিকারক দেবী। গৃহের ধন সম্পদ হানীর জন্য দায়ী।
১৭১) মিদ্দি মি.গামসিল_দারেং (Mi.gamsil Dareng):
যিনি মানুষের জন্য অস্ত্র-শস্ত্র তৈরী করতে সাহায্য করেন।
১৭২) মিদ্দি মেন.ফা_রংদিফা (Menfa Rongdifa):
সর্পরাজ। দেবী নাগনি বা সাংখিনির স্বামী।
১৭৩) মিদ্দি ওয়ালগাথ (Walgath) :
সর্বাঙ্গে ব্যাথার জন্য দায়ী। তাকে মোরগ দিয়ে পূজা দিতে হয়।
১৭৪) মিদ্দি ওয়াল (Wal):
ইনি অগ্নি দেবতা। একটি পাঁঠা, একটি মোরগ ও একটি মুরগী দিয়ে পুজা দিতে হয়।
১৭৫) মিদ্দি চকখেলা চুগারিয়ানি মিদ্দি (Chokkhela Ra.na Re.ao Chugariani) :
পুজার আয়োজনের মাটির হাঁড়ি প্রস্তুতকালে এই দেবতাকে স্মরণ করতে হয়।
১৭৬) স.না চুগারিয়ানি মিদ্দি (So.na Chugariani):
পুজার আয়োজনে আগুন জ্বালানোর সময় এই দেবতাকে স্মরণ করতে হয়।
১৭৭) স.না হাম্মো চুগারিয়ানি মিদ্দি (So.na hammu Chugariani):
পুজার আয়োজনে আগুন জ্বালানোর প্রস্তুতিকালে এই দেবতাকে স্মরণ করতে হয়।
১৭৮) দো.মি পদ্দি চুগারিয়ানি মিদ্দি (Do.mi potdi Chugariani):
পুজার সময় মাথায় দো.মি বা মুরগীর পালক গুঁজবার সময় এই দেবতাকে স্মরণ করতে হয়।
১৭৯) মিদ্দি দো.মি গান্দুনি রংদু (Do.mi Ganduni Rongdu):
পুজার সময় মাথায় দো.মি গুঁজবার সময় এই দেবতাকেও স্মরণ করতে হয়।
১৮০) আস্কি দো.মি চা.আও রুগালা ওয়ানমারাঙানি মিদ্দি (Aski Do.mi cha.ao rugala wanmaranga) :
ইনি তারাদের দেবতা।
১৮১) মিদ্দি দেন.মারাঙা ওয়ানগালানি (Denmarang.a Wangala) :
এই দেবতাকে দেনমারাঙা পুজার সময় এই দেবতাকে স্মরণ করতে হয়।
১৮২) মিদ্দি জা.সুয়েদ্দো চুগারিয়ানি মিদ্দি (Jasueddo Chugariani):
এই দেবতাকে খামাল বা পুরোহিতের শরীর ধৌত বা স্নানের সময় স্মরণ করতে হয়।
১৮৩) মিদ্দি রংচাকা (Rongchaka):
মেয়েদের গর্ভকালিন সময়ে পেটে ব্যথা হলে এবং কোন পরপুরুষের সাথে সহবাস করতে দেখেলে একটি মোরগ দিয়ে পুজা দিতে হয়।
১৮৪) মিদ্দি ওয়া.সঙা (Wasonga):
জন্য আপফা তাতারাকে পুজার সময় এই দেবতাকে স্মরণ করতে হয়।
১৮৫) মিদ্দি সঙ্গল বা সঙ্গল তংএ আমুয়ানি মিদ্দি (Songol Tonge Amuani):
তলপেটের ব্যথায় এই দেবতাকে একটি মোরগ দিয়ে পুজা দিতে হয়।
১৮৬) মিদ্দি দকবান্দা/দকমান্দা (Dokbanda):
জ্বালাপোড়াসহ পেটের ব্যথা হলে এই দেবতাকে একটি মোরগ দিয়ে পুজা দিতে হয়।
১৮৭) চিরিং চিদিকনি মিদ্দি (Chiringni chidekni):
জ্বালাপোড়াসহ হাড়ে ব্যথা এবং ঘা হলে এই দেবতাকে একটি পাঁঠা অথবা একটি মোরগ দিয়ে পুজা দিতে হয়।
১৮৮) মিদ্দি নকসাম (Noksam):
মেয়েদের অতিরিক্ত ঋতুস্রাবের কারণে এই দেবতাকে একটি মোরগ দিয়ে পুজা দিতে হয়।
১৮০) মিদ্দি রামাসাম (Ramasam):
রোগী বারবার মুর্ছা গেলে একটি লাল রঙের মুরগী দিয়ে পুজা দিতে হয়।
১৮১) মিদ্দি হা.দিক (Hadik):
রোগী কানের সমস্যায় একটি মুরগী এবং একটি ডিম দিয়ে পুজা দিতে হয়।
১৮২) মিদ্দি ওয়া.কারাং (Wakarang): পায়ের ঘায়ের জন্য একটি মোরগ দিয়ে পুজা দিতে হয়।
১৮৩) মিদ্দি সালচাফা ( Salchafa):
জ্বরের জন্য একটি পাঁঠা বলি দিয়ে পুজা দিতে হয়।
১৮৪) মিদ্দি মংজিমফা (Mongjimfa):
কানে কম শুনলে সমস্যায় একটি ডিম দিয়ে পুজা দিতে হয়।
১৮৫) মিদ্দি খুরিফিপা_মেলাদমফা (Khurigipa Meladomfa):
রোগী অস্বাভাবিক আচরণ বা পাগলামি করলে সমস্যায় একটি মোরগ দিয়ে পুজা দিতে হয়।
১৮৬) মিদ্দি দুছেংমা (Dochengma):
হাত ও পায়ের আঙ্গুলের গিরায় যন্ত্রণা হলে একটি মুরগী দিয়ে পুজা দিতে হয়।
১৮৭) মিদ্দি খামছে দুংফা (Khamche Dungfa):
মলদ্বারে জ্বালাপোড়া সমস্যায় একটি মোরগ দিয়ে পুজা দিতে হয়।
১৮৯) মিদ্দি দালগুবা হান্থাম (Dalgipa Hantam):
সারা শরীরেরজ্বালাপোড়া সমস্যায় একটি মোরগ দিয়ে পুজা দিতে হয়।
১৯০) মিদ্দি সুসিমে হানথাম (Susime Hantam):
জ্বর হলে একটি মোরগ দিয়ে পুজা দিতে হয়।
১৯১) মিদ্দি চি_গিৎচাম (Chi_Gitcham):
জ্বালাপোড়া জ্বরের সময় প্রচণ্ড শীত অনুভব হলে একটি মুরগী দিয়ে পুজা দিতে হয়।
১৯২) মিদ্দি মাতমিমাং (Matmimang) :
গভীর অরণ্যে বসবাসকারী দেবতা। বনের ভেতর নিরাপদে থাকার জন্য এই মাতমিমাংকে পুজা দিতে হয়।
১৯৩) মিদ্দি দিংরিকনা রেআও চুগারিয়ানি মিদ্দি (Dingrikna Re.ao Chugariani) :
ইনি যুদ্ধক্ষেত্রে শক্তি যোগানদাতা দেবতা।
১৯৪) মিদ্দি সিকনা_আদাসা_দোনা_মামাসা (Sikna Adasa Dona Mamasa):
মাটিকে শক্ত ও পানিকে সুপেয় দানকারী দেবতা।
১৯৫) মিদ্দি মতলফা সিংসলফা (Motolfa Silongfa):
এই দেবতা মিদ্দি মিসি মেআ দিংসি পান্থে নামেও পরিচিত।
১৯৬) মিদ্দি আখক মেয়া সিংখক পান্থে (Akhok Me.a Singkhok Panthe):
ইনি মানুষের সাহায্যকারী ও কল্যাণকর দেবতা।
১৯৭) মিদ্দি গাকমি_দিলমে (Gakme Dilme):
ইনি মানুষের সাহায্যকারী ও কল্যাণকর দেবতা।
১৯৮) খামাল জাবাংসি :
ইনি মানুষের সাহায্যকারী ও কল্যাণকর দেবতা। পাতালপুরীতে বসবাস করেন। ইনিই স্বপ্নে খামালদেরকে স্বপ্নে শিক্ষা দিয়ে থাকেন।
১৯৯) মিদ্দি ইনচা_রেংসিন :
ইনি মানুষের সাহায্যকারী ও কল্যাণকর দেবতা।
২০০) মিদ্দি আলিক_বালমিন :
ইনি মানুষের সাহায্যকারী ও কল্যাণকর দেবতা।
২০১) মিদ্দি মাতরাম চিরেং :
ইনি মানুষের সাহায্যকারী ও কল্যাণকর দেবতা।
২০২) মিদ্দি খিসিং_পেংউয়েং :
ইনি মানুষের সাহায্যকারী ও কল্যাণকর দেবতা।
২০৩) মিদ্দি মাতরাম_তাক্কিল :
পাতালপুরীর দেবতা; ইনিও মানুষের সাহায্যকারী ও কল্যাণকর দেবতা।
২০৪) মিদ্দি গিংবো_সালো :
পাতালপুরীর দেবতা; ইনিও মানুষের সাহায্যকারী ও কল্যাণকর দেবতা।
২০৫) মিদ্দি নাচিবোক্কাল :
পাতালপুরীর দেবতা; ইনিও মানুষের সাহায্যকারী ও কল্যাণকর দেবতা।
২০৬) মিদ্দি কুসিম সাউইল :
পাতালপুরীর দেবতা; ইনিও মানুষের সাহায্যকারী ও কল্যাণকর দেবতা।
২০৭) মিদ্দি খাচিবত্তিং :
পাতালপুরীর দেবতা; ইনিও মানুষের সাহায্যকারী ও কল্যাণকর দেবতা।
২০৮) মিদ্দি খাগ্রাক:
ইনি মানুষের সাহায্যকারী দেবতা।
২০৯) দুরামা_ইম্বামা:
মিদ্দি খোয়াসি_মিন্দুরি ও আরাতচা_রংবারের ছোটবোন। তাঁদের মায়ের নাম রেজিং_রেজে এবং পিতার নাম মিদ্দি আরিংরাং_দিরিংরাং। এই দেবতাকে একটি শূকর এবং একটি মোরগ ও একটি মুরগী দিয়ে এই দেবতাকে পুজা দিতে হয়।
২১০) মিদ্দি সালগ্রা:
ইনি শক্তিধর দেবতা।
২১১) মিদ্দি আসিমা দিংসিমা রুরান চংচান :
মিদ্দি সালগ্রার মাতা।
২১২) মিদ্দি আজেরিং দিংজেরিং :
মিদ্দি তাতারা_রাবুগার মা।
২১৩) মিদ্দি সিমারং জাস্রং :
মিদ্দি তাতারা_রাবুগার পিতা।
২১৪) মিদ্দি সিরিকা রাদিঙ্গা :
মিদ্দি তাতারা_রাবুগার পুত্র।
২১৫) মিদ্দি সনাকালে আবু রেনচে :
মিদ্দি সুসিমের মাতা।
২১৬) মিদ্দি আনিং মিক্রিমিল চিনিং চাংগ্রিমিল :
মিদ্দি সুসিমের পিতা।
২১৭) মিদ্দি স্রিংগানে আসেজল :
মিদ্দি আবেতরেংগির মাতা।
২১৮) মিদ্দি দুদু জা.স্রাং :
মিদ্দি আবেতরেংগির পিতা ।
২১৯) মিদ্দি প.ওক আ.নদক :
মিদ্দি মিসি সালজং-এর মাতা।
২২০) মিদ্দি রিকওয়া_সানওয়া :
মিদ্দি মিসি সালজং-এর পিতা।
২২১) মিদ্দি আবু রাচা দেকবু গিত্তেল :
মিদ্দি মিসি সালজং-এর বড়ভাই।
২২২) মিদ্দি সিরিক্কা রাদিংগা :
মিদ্দি মিসি সালজং-এর ভাগ্নে।
২২৩) মিদ্দি মিসি চিপিনফা সালজং নাদানফা :
মিদ্দি মিসি সালজং-এর সহকারী।
২২৪) মিসি সালমারা সালজং নিমারতা :
মিদ্দি মিসি সালজং-এর সহকারী।
২২৫) মিদ্দি মিসি আপিলফা সালজং গালাফা :
মিদ্দি মিসি সালজং-এর সহকারী।
২২৬) মিদ্দি মিসি আরাকফা সালজং গিংমাতফা :
মিদ্দি মিসি সালজং-এর সহকারী।
২২৭) মিদ্দি দিনা_অকপেত :
মিদ্দি গয়েরার বংশধর।
২২৮) রকমান মেয়া :
মিদ্দি গয়েরার বংশধর।
২২৯) চেংমান পান্থে :
মিদ্দি গয়েরার বংশধর।
২৩০) মিদ্দি দিদি_রাংপেত :
মিদ্দি গয়েরার মামা।
২৩১) মিদ্দি আকুয়াবেল_আরাবেলবেল :
মিদ্দি গয়েরার মামা।
২৩২) মিদ্দি দুরো_চাংরো :
মিদ্দি গয়েরার বোন।
২৩৩) মিদ্দি নোয়ে-নোতে :
মিদ্দি গয়েরার বোন।
২৩৪) মিদ্দি আনাং (Anang):
মেয়েদের জরায়ুতে সমস্যা বা জরায়ু ফুলে গেলে এই দেবতাকে একটি মোরগ এবং একটি ডিম দিয়ে পুজা দিতে হয়।
২৩৫) মিদ্দি মাসেন্না_মাসেন্নি :
মিদ্দি আনাং-এর মাতা।
২৩৬) মিদ্দি আগ্রেং_মেআ_সালগ্রেং_পান্থে :
মিদ্দি আনাং-এর পিতা।
২৩৭) মিদ্দি রেচি_রেবাল :
মিদ্দি আনাং এর কন্যা।
২৩৮) মিদ্দি মানসিং_মেআ_দিলসিং_পান্থে :
মিদ্দি আনাং-এর জামাতা।
২৩৯) মিদ্দি ওয়ালাং (Walang):
হাত ও পায়ের ফোস্কা জাতীয় রোগের কারণে একজোড়া কবুতর দিয়ে এই দেবতাকে পুজা দিতে হয়।
২৪০) মিদ্দি সুয়াক্কি_আবাক্কি :
মিদ্দি ওয়ালাং এর মাতা।
২৪১) মিদ্দি রিকগাসিল_গংগাসিল:
মিদ্দি ওয়ালাং-এর পিতা।
২৪২) মিদ্দি মেনাকগি_অকচেংগি :
মিদ্দি ওয়ালাং-এর কন্যা।
২৪৩) মিদ্দি আরাসং_দুদুগং :
মিদ্দি ওয়ালাং-এর জামাতা।
২৪৪) মিদ্দি বকগ্রিং_মেয়া_বালরিং_পান্থে :
মিদ্দি ওয়ালাং-এর পুত্র।
২৪৫) মিদ্দি দিমে_বালসে :
মিদ্দি কোয়াসি এর মাতা
২৪৬) মিদ্দি রিংগ্রিঙা_রিংগ্রিংগ্রি :
মিদ্দি কোয়াসি এর পিতা।
২৪৭) মিদ্দি বালসেন্না_বালসেন্নি :
কোয়াসি এর কন্যা।
২৪৮) মিদ্দি স্পাকজা_চানচাকজা :
কোয়াসি এর জামাতা।
২৪৯) মিদ্দি ম্রিং :
মেয়েদের গর্ভাস্থায় বাচ্চার স্বাভাবিক অবস্থানে না থাকলে এবং পেটে ব্যথা হলে একটি মোরগ দিয়ে পুজা দিতে হয়।
২৫০) মিদ্দি ম্রিং_নোদিং_নংসুরেং_নোবালজেং :
মিদ্দি ম্রিং এর মাতা।
২৫১) মিদ্দি বাংগিলিং_বাংগিলাং :
মিদ্দি ম্রিং-এর পিতা।
২৫২) মিদ্দি মাদ/ মাআদ (Mad or Ma.ad):
ইনি মানুষের অকল্যাণকারক অপদেবতা। এই দেবতাকে একটি শূকর এবং একটি চু/পানীয় দিয়ে পুজা দিতে হয়।
২৫৩) মিদ্দি দিঙারি_দিংসেরি :
মিদ্দি মাদ-এর মাতা।
২৫৪) মিদ্দি আরিমিত_দিংগ্রিমিত :
মিদ্দি মাদ-এর পিতা।
২৫৫) মিদ্দি রাংগ্রা:
বুকে ব্যথার কারনে শ্বাসপ্রশ্বাসের সমস্যায় এই দেবতাকে একটি ছাগী এবং একটি মোরগ দিয়ে পুজা দিতে হয়।
২৫৬) মিদ্দি রুবেনা_রুবেনি :
মিদ্দি রাংগ্রা-এর মাতা।
২৫৭) মিদ্দি আরিং_রাচা_দিরিং_গিত্তেল :
মিদ্দি রাংগ্রা-এর পিতা।
২৫৮) মিদ্দি দিকরাং_দিকচাং:
আবেং চিসিমগ্রি নামক স্থানে অবস্থানকারী দেবতা।
২৫৯) মিদ্দি আসলসুদা:
মিদ্দি রানার পিতা।
২৬০) মিদ্দি মিনতাং_গা.ম্রে গারে_রিকওয়ারি:
মিদ্দি রাংগ্রা-এর কন্যা।
২৬১) মিদ্দি বলবক_বালিং_কাকা রিংতেক:
মিদ্দি রাংগ্রা-এর জামাতা।
২৬২) মিদ্দি চিতমাং/চিকমাং:
সিম্মা পরীক্ষা দেখার উপর দেবতার চাহিদা অনুসারে এই দেবতাকে একটি মোরগ এবং একটি ডিম দিয়ে এই দেবতাকে পুজা দিতে হয়।
২৬৩) মিদ্দি মিংনারি_নোবিলসি:
মিদ্দি চিতমাং-এর মাতা।
২৬৪) মিদ্দি আ.বাজেলজিম:
মিদ্দি চিতমাং-এর পিতা।
২৬৫) মিদ্দি রামা গনচু ( Rama Gonchu):
মাথাঘোরা এবং সারা শরীর ঝিমঝিম করলে একটি মোরগ দিয়ে পুজা দিতে হয়।
২৬৬) মিদ্দি রেজিং_রেজে :
মিদ্দি দুরামা_ইম্বামা-এর মাতা।
২৬৭) মিদ্দি আরিংরাং_দিরিংরাং :
মিদ্দি দুরামা_ইম্বামা-এর পিতা।
২৬৮) মিদ্দি রুউত্রেবাং_রেবাং_বাংজাং :
মিদ্দি দুরামা_ইম্বামা-এর কন্যা।
২৬৯) মিদ্দি বমিদ্দি করিং_মেয়া_বালরিং_পান্থে:
মিদ্দি দুরামা_ইম্বামা-এর জামাতা। ইনি মিদ্দি ওয়ালাং-এর পুত্র।
২৭০) মিদ্দি মোওকমা/ মুকমা:
এই দেবতাকে একটি ছাগী এবং একটি লাল মোরগ দিয়ে পুজা দিতে হয়।
২৭১) মিদ্দি রাংমিক_দিলচে :
মিদ্দি মুকমা-র মাতা।
২৭২) মিদ্দি দিরান_বালমাং_বালমাং_জা.চান:
মিদ্দি দুরামা_ইম্বামা এর পিতা।
২৭৩) মিদ্দি বকদানিদা_চংচা_মালগা:
মিদ্দি দুরামা_ইম্বামা এর জামাতা।
২৭৪) মিদ্দি ইরেন্দি দিক্কিম্বি :
চেনদোদিল নামক স্থানে অবস্থানকারী দেবতা।
২৭৫) মিদ্দি সানতিমসিলো :
মিদ্দি ইরেন্দি দিক্কিম্বি-র পিতা।
২৭৬) মিদ্দি সাংক্রা_মাংক্রা:
গাবিল নামক স্থানে অবস্থানকারী দেবতা।
২৭৭) মিদ্দি আখিল জাকমে :
মিদ্দি সাংক্রা_মাংক্রা-র স্ত্রী।
২৭৮) মিদ্দি সালনাংগি :
বিন্দিংগ্রো নামক স্থানে অবস্থানকারী দেবতা।
২৭৯) মিদ্দি রোম্বে/রম্বি :
মিদ্দি সালনাংগি-র স্ত্রী।
২৮০) মিদ্দি তেনাং_পাতনাং :
গরেং নামক স্থানে অবস্থানকারী দেবতা।
২৮১) মিদ্দি রিংরিং_খিম্বি:
মিদ্দি তেনাং_পাতনাং-র স্ত্রী।
২৮২) মিদ্দি আদিজা_বামজা:
নংবাক নামক স্থানে অবস্থানকারী দেবতা।
২৮৩) মিদ্দি মেলানি_নরিদ্দি :
মিদ্দি আদিজা_বামজা-র স্ত্রী।
২৮৪) মিদ্দি আরুয়া_দাংগাফা :
রুত্রেকিং বলসাল দাগাল নামক স্থানে অবস্থানকারী দেবতা।
২৮৫) মিদ্দি মেকে_গুনে :
মিদ্দি আরুয়া_দাংগাফা-র স্ত্রী।
২৮৬) মিদ্দি আমরি:
গলাফোলা ও গলগণ্ড রোগের কারনে এই দেবতাকে একটি ছাগী ও একটি মোরগ দিয়ে ধূপ জ্বালিয়ে পুজা দিতে হয়।
২৮৭) মিদ্দি রাসিমে_দিংসিমে (Rasime Dingsime):
মিদ্দি আমরি-র মাতা।
২৮৮) মিদ্দি স্মারেং_জা.সেং ( Smareng Ja.seng):
মিদ্দি আমরি-র পিতা।
২৮৯) মিদ্দি রা.না (Ra.na):
পাঁজরে বা বুকের একপাশে ব্যথা হলে একজোড়া কবুতর দিয়ে পুজা দিতে হয়।
২৯০) মিদ্দি রানাজিং_তংকিয়ানি (Ranajing Tongkhiyani):
মিদ্দি রানা (দেবী)র স্বামী।
২৯১) মিদ্দি থিংদিলমিক_থিংদিলমে (Thingdilmik Thingdilme):
মিদ্দি গয়েরার ছোটবোন।
২৯২) মিদ্দি ওয়াকনাল মেয়া বানাল পান্থে:
মিসি সালজং-এর পুত্র।
২৯৩) স্খাল গাকমে_দিলমে :
ইনি অতিকায় দানব শয়তান; যিনি সারা পৃথিবী ঘুরে মানুষের অকল্যাণকারক কর্মকাণ্ড করে বেড়ায়।
২৯৪) স্খাল ওয়াকমাংগানচি_আরাগনদি:
ইনি মানুষের অকল্যাণকারক অপদেবতা।
২৯৫) স্খাল জুদি নাওয়াং:
ইনি মানুষের অকল্যাণকারক অপদেবতা।
২৯৬) স্খাল লাইখকসি খামাল:
ইনি মানুষের অকল্যাণকারক অপদেবতা।
২৯৭) স্খাল থাসিস্তুমি :
ইনি মানুষের অকল্যাণকারক অপদেবতা।
২৯৮) স্খাল গিতচু :
ইনি মানুষের অকল্যাণকারক অপদেবতা।
২৯৯) স্খাল অকখুয়াং:
ইনি মানুষের অকল্যাণকারক অপদেবতা।
৩০০) ওয়াক স্খাল_ওয়াকগ্রো:
ইনি মানুষের অকল্যাণকারক অপদেবতা। এহেন বলা যেতে পারে সাত হাজার দেবতা এবং সাতশত উপদেবতাদের উপাসনা, মন্ত্রতন্ত্র, জাদু-টোনা ইত্যাদি নিয়েই সাংসারেক ধর্ম। এরা সর্ব প্রাণবাদী ও বস্তুর দ্বৈতসত্তায় বিশ্বাসী এবং প্রকৃতি ও জড়বস্তুতে প্রাণ আরোপ করে। এরা সাপ ও বাঘকে মনে করে প্রেতাত্মার দেহীরূপ। কোনো কোনো মানুষ দিনে মানুষ থাকে এবং রাতে বাঘ হয়ে যায়। গারো ভাষায় এটাকে বলে Òবাৎছাদু-মাৎছাবেদÓ। কোনো কোনো গাছ, পাথর, টিলা ভূতপ্রেতের আবাস, এ বিশ্বাসে তারা এগুলিকে এড়িয়ে চলে। গারোদের অনুষ্ঠানাদি উদযাপন, মহামারীর বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট প্রক্রিয়ায় ব্রত পালন, তাবিজ এবং ভেষজ দিয়ে রোগ-বালাইয়ের নিরাময় ইত্যাদি যাঁরা করেন, তাঁরা সমাজের সম্মানিত ব্যক্তি। এই ব্যক্তিবর্গ খামাল (Khamal) নামে পরিচিত। আর এই খামাল বা কবিরাজদেরকে অলৌকিক শক্তিসম্পন্ন ব্যক্তি মনে করা হয়।